সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয় পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ২ কাউন্সিলর প্রার্থীর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে কারসাজির মাধ্যমে জয়ের লোভে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী এই টাকা দেন।
জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারি ফোনে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি লোভের ফাঁদে ফেলে লাটিম প্রতীকের ইয়াসিন মোল্লা ও টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের আবুল কাশেমের কাছ থেকে ওই টাকা হাতিয়ে নেয়। ইয়াসিন মোল্লা আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। সেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী থাকলেও তিনি ভোটের মাঠে আছেন।
ওই ঘটনায় ইয়াছিন মোল্লার হয়ে তাঁর ছেলে কাওসার মোল্লা বাদী হয়ে গত ২৪ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে মামলা করেছেন। একই ওয়ার্ডের টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কাশেমের কাছ থেকে একই কায়দায় সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। কাশেমের ম্যানেজার ফরহাদ এ ব্যাপারে থানায় জিডি করেছেন।
ইয়াছিন মোল্লার ছেলের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২২ জানুয়ারি সকালে আদাবর থানার ওসির পরিচয়ে ০১৭১৩৩৭৩১৮৩ নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, ‘আমি ওসি (আদাবর থানা), আমি আপনার জন্য নির্বাচনে কিছু করতে পারলাম না। কিন্তু আপনার জন্য একটি পথ তৈরি করে দিই। আপনি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আদাবর থানার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলেন।’ তারপর ওসি পরিচয়দাতা ব্যক্তি ০১৯০৬৬৬৩০৯৬ নম্বরটি দিয়ে বলে, এটি ম্যাজিস্ট্রেটের নম্বর।
খানিকবাদে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ধারীর নম্বর থেকে ফোন করে ইয়াসিন মোল্লাকে বলা হয়, ‘আপনি কি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হতে চান? যদি হতে চান, তাহলে আপনাকে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। নির্বাচনের আগে পাঁচ লাখ টাকা এবং পাস করার পর ১০ লাখ টাকা দিতে হবে।’ এতে ইয়াসিন মোল্লা রাজি হয়ে ১২ দফায় পাঁচ লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠান সেই ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ধারীর দেওয়া নম্বরে।
এরপর সেদিন সন্ধ্যায় ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ধারী প্রতারক আবারও ফোন করে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা চাইলে ইয়াসিন মোল্লার সন্দেহ হয়। তখন তিনি বিষয়টি ফোন করে ওসিকে জানান। একই ওয়ার্ডের টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কাশেমের কাছ থেকেও একইভাবে সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘দুজন প্রার্থীর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। আমাদের ধারণা তারা ওসির নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা করেছে। এই ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানা ও আদাবর থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি প্রতারক চক্রকে দ্রুতই ধরা সম্ভব হবে।’