চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে জন্ম নেয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে। এখন পর্যন্ত চীনসহ ২৭টি দেশে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, এসব দেশে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬৪ হাজার ৪৫৭ জন। এরমধ্যে চীনেই আক্রান্ত ৬৩ জন ৯১৭ জন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী চীনে নতুন করে আরও ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল একদিনে মারা গেছেন ১৩৯ জন। পুরো চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ হাজার আর নিহতর সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৩ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো উহানে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর চীনসহ ২৭টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। এতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবং প্রাণহানি বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরপর এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশগুলো ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়।
চীন থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বের কোনো কোনো দেশ চীনা নাগরিকদের নিজ দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেড় মাসে চীনের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
চীনের বাইরে যে ২৬টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এসব দেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫৪০ জন। আর এদের বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশ রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১৫ জন। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আক্রান্ত তিনজন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আক্রান্তদের অধিকাংশই চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরেছিলেন।
বেলজিয়ামে উহান থেকে নয়জন ফিরেছিলেন। তাদের মধ্যে এক জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। কম্বোডিয়ায় এক জন, কানাডায় ৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
চীনের উহান থেকে ফিনল্যান্ডে আসা এক নারী পর্যটকের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পরেছে।
করোনা আক্রান্ত প্রথম ইউরোপিয়ান দেশ হলো ফ্রান্স। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১১ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জার্মানিতে আক্রান্ত হয়েছে ১৬ জন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চীনের উহান থেকে ফেরা তিন ছাত্রের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।
চীনের উহান থেকে ফিরিয়ে আনা ইতালির ৫৬ নাগরিকের একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে আরও দুই জন চীনা পর্যটক এই রোগে আক্রান্ত।
সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২৫৮ জন। জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরের কাছে পৃথক করে রাখা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে মোট ২১৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে ৮০ বছর বয়সী এক নারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এছাড়া আরও ৪০ জনের আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
মালয়েশিয়ায় করোনা আক্রান্ত ১৯ জন। যাদের ১৭ জন চীনা ও দুই জন মালয়েশিয়ান নাগরিক। এছাড়া নেপালে একজন, ফিলিপাইনে তিনজন, রাশিয়ায় দুই জন, সিঙ্গাপুরে আক্রান্ত ৬৭ জন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ জন, স্পেনে দুইজন, শ্রীলঙ্কায় এক জন, সুইডেনে ১ জন, তাইওয়ানে ১৮ জন, থাইল্যান্ডে ৩৩ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৮ জন, যুক্তরাজ্যে ৯ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ জন, ভিয়েতনামে ১৬ জন এবং মিশরে এক জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।