চীনসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে মারাত্মক আকার ধারণ করা করোনাভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক না ছড়াতে আহ্বান জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর। সরকারি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে চীন বা সিঙ্গাপুর থেকে কেউ ফিরলেই তিনি করোনায় আক্রান্ত এমনটা ঠিক নয়। তাদের নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা বাংলাদেশিদের নিয়ে তাদের এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়। তাদের হাসপাতালে যেতে চাপ দেয়ার ঘটনাও ঘটছে।
এই প্রেক্ষাপটে সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা বাংলাদেশিদের নিয়ে মানুষের ভেতরে কিছু ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। আমরা একটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি, ইদানীং সিঙ্গাপুর বা চীন থেকে এলেই তাকে আইসোলেশন করার একটা প্রেসার আসে মানুষ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের কাছ থেকে। কিন্তু চায়না বা সিঙ্গাপুর থেকে এলেই তো তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না।
ডা. ফ্লোরা বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে বা চীন থেকে এলেই তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ঢাকার বাইরের প্রশাসনে যারা আছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেই তার মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ আছে কি না, তা দেখেই আমরা তাকে আইসোলেশনে নেব। তাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর প্রয়োজন হলে সেই পরামর্শও স্বাস্থ্য বিভাগ দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, তার মানে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী নেই। কারও মধ্যে এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
- আরও পড়ুন >> তিন আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে। সেখানে ভাইরাসটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি। যদিও চীন দাবি করছে, সংক্রমণের হার কমে আসছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি চীন থেকে ৩১২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। ঢাকার আশকোনার হজ ক্যাম্পের কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন অবস্থানের পর শনি ও রবিবার তারা বাড়ি ফিরে যান। তাদের কারও শরীরে ভাইরাসের আলামত মেলেনি। চীনের হুবেই প্রদেশে এখনো ১৭১ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটছে আছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার আলোচনা চলছে। যদিও চীনা রাষ্ট্রদূত এই মুহূর্তে তাদের ফিরিয়ে না আনতে পরামর্শ দিয়েছেন।