করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ৩ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য যখন হুমকির মুখে তখন ফুটবলে এর প্রভাবটা পড়েছে বড়সড় ভাবে। ইতালিতে সিরি আ-র ম্যাচ দুই দফায় পিছিয়েছে, এখন দর্শকশূন্য গ্যালারিতে খেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চীনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘরোয়া লিগ পিছিয়ে গেছে।
প্রতিদিন যখন নতুন করে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে- সেটা ভাবিয়ে তুলেছে ফিফা ও এএফসিকেও। তাইতো বাতিল হতে পারে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটি।
বৃহস্পতিবার ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কাউন্সিল জরুরি এক বৈঠকে বসেছিল। এর পর দুই পক্ষের বিবৃতিতে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়া কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে মার্চ মাসে মোট ৩৬ টি ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে পুরো এশিয়া জুড়ে।
ওই বৈঠকের পর এএফসি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা প্রতিটি দেশের ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগের পর সার্বিক অবস্থা বিবচেনা করে এরপর খেলার দিন-তারিখ বদল হবে কি না সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এএফসির বিবৃতিতে এশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের কথা আলাদা করে গুরুত্ব পেয়েছে। মূলত চীন, কোরিয়া, জাপান এই অংশে পড়ে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এই অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি। মার্চে বাংলাদেশ বাছাইপর্বে খেলবে আফগানিস্তান ও কাতারের বিপক্ষে। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচটি হওয়ার কথা রয়েছে সিলেটে, আর কাতারে বাংলাদেশ খেলবে অ্যাওয়ে ম্যাচ।
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ অবশ্য বলছেন এই মুহুর্তে বাংলাদেশের বিচলিত হওয়ার খুব বেশি কারণ নেই, তবে কাতারের ম্যাচটি নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় আছেন তারা।
- জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- করোনা ভাইরাস : ৫ হাজার কোটি ডলার দেবে আইএমএফ
তিনি বলেন, ‘আমরা ফিফা ও এএফসির বৈঠকের আপডেট রাখছি। আমাদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর পরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত যা অবস্থা তাতে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ নিয়ে তেমন শঙ্কার কিছু দেখছি না। ১১ তারিখ বসুন্ধরা কিংস এএফসি কাপের ম্যাচ খেলবে। কাতারে অবশ্য এই ভাইরাস ধরা পড়েছে। ওই ম্যাচ নিয়ে সিদ্ধান্ত আমরা বৈঠকের পর জানাব।’
কাতারে করোনার প্রকোপ ধরা পড়লেও সেখানে এখন পর্যন্ত কোনো স্পোর্টিং ইভেন্ট বন্ধ করা হয়নি। চীনা অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণে কাতার টোটাল ওপেনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে। আপাতদৃষ্টিতে তাই বাংলাদেশের মার্চ মাসের ম্যাচগুলো বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে করোনা যেভাবে প্রতিদিন নতুন করে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে আপাতত শঙ্কার মধ্যেই রাখতে হচ্ছে বাংলাদেশের এই দুইটি ম্যাচকে।
এএফসি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর নতুন সিদ্ধান্ত জানানোর আগ পর্যন্ত তাই শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা এশিয়ার ম্যাচগুলোই হুমকির মধ্যে রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া মার্চের সঙ্গে জুন মাসের বাছাইপর্বের ম্যাচগুলোও স্থগিত করে অক্টোবরে নতুন সময়সূচী দিয়েছে। যে দেশ থেকে করোনা ভাইরাসের শুরুর সেই চীন অবশ্য স্থগিত করার দিকে এখনও পা দেয়নি। নিজেদের হোম ম্যাচ খেলার জন্য ভেন্যু হিসেবে তারা নির্ধারণ করেছে থাইল্যান্ডকে।