তৈরি পোশাকশিল্প শ্রমঘন হওয়ায় এ খাতের শ্রমিদের করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য আগে থেকেই নির্দেশনা দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী মালিকরাও নিয়েছেন বিভিন্ন পদক্ষেপ। তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ‘করোনা কন্ট্রোল রুম’ খোলার পাশাপাশি আশুলিয়াসহ এলাকাভিত্তিক চারটি কমিটি করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক। তিনি বলেছেন, শ্রমিদের নিরাপদ রাখায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছেন তারা।
জানা গেছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। করোনা আতঙ্কের মধ্যেই তারা শিল্প-কারখানায় যাচ্ছেন প্রতিদিন।
কলকারখনা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে করোনা সচেতনতা বিষয়ে লিফলেট ও পোস্টার পাঠানো হয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছে। আগামীকাল শনিবার আমরা এ বিষয়ে মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। আমরা বিভিন্ন কারখানার মালিকদের করোনাভাইরাস বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে চিঠি দিয়েছি। কেউ শনাক্ত হলে হটলাইনে আমাদের জানাতে পারবে।’
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘করোনা বিষয়ে তথ্য জানতে বিজিএমইএ ইতোমধ্যে হটলাইন চালু করেছে। এ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। হাসপাতাল ও হেলথ সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একাধিক মনিটরিং সেল এগুলো মনিটরিং করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নানা রকম কার্যক্রম চলছে। পোশাকশিল্পের কর্মীদের মধ্যে সচেতনা বাড়ানো হচ্ছে। হাইজিন বোঝানো হচ্ছে। আমরা ওয়ার্কারদের জন্য ইনফোগ্রাফিক্স করেছি। প্রতিটি ফ্যাক্টরিতে পোস্টার বুলেটিং সব যাচ্ছে। আমরা ঝটিকা সফর করছি। বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে শুধু কমিটি করেই বসে থাকিনি। কাজ করছে কিনা সেটা দেখা হচ্ছে। এগুলো নিয়ে আমরা তৎপর আছি।’
ড. রুবানা বলেন, ‘আমাদের শ্রমিদের নিরাপদ রাখা আমাদের দায়িত্ব। এই নিরাপত্তা দেওয়ার যায়গাথেকে আমরা সরে আসছি না’।
বিজিএমইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাস থেকে শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজ নিজ শ্রমিকদের জন্য হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা রাখা, পর্যাপ্ত পানি ও সাবান রাখা, প্রয়োজনে গরম পানি সরবরাহের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। বিজিএমইএর উত্তরা অফিসে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ‘বিজিএমইএ-করোনা কন্ট্রোল রুম’ খোলা হয়েছে। গার্মেন্টস শিল্প অধ্যুষিত এলাকায় করোনা পরিস্থিতি নজরদারি ও প্রয়োজনে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিজিএমইএর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৪টি এলাকাভিত্তিক (জোনওয়াইজ) কমিটি গঠন করা হয়েছে। এলাকাগুলো হলো ১. আশুলিয়া, সাভার ও নবীগঞ্জ; ২. গাজীপুর, শ্রীপুর ও মাওনা; ৩. ডিএমপি এলাকা ও ৪. নারায়ণগঞ্জ।
এ ছাড়া করোনা বিষয়ে যেকোনো তথ্য জানানো বা জানার জন্য বিজিএমইএ উত্তরা অফিসে একটি হটলাইন চালু করা হয়েছে। এই হটলাইনে কল রিসিভ করছেন বিজিএমইএর প্যারামেডিকস ও নার্স। হটলাইন থেকে করোনা বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেলে সরেজমিনে দেখা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাভিত্তিক কমিটিগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।