সফল অধিনায়ক হতে তামিমকে টিপস দিলেন মাশরাফি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তামিম-মাশরাফি
তামিম-মাশরাফি। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক হওয়ার যোগ্যতা নতুন ওয়ানডে দলপতি তামিম ইকবালের আছে বলে মনে করেন সাবেক ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ জন্য ড্যাশিং ওপেনারকে নিজের ‘আত্ম-অনুভূতির’ ওপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মাশরাফি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার পর টাইগার ওয়ানডে দলনেতা হন তামিম। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এখনও দলকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ হয়নি তার।

দেশের সফল অধিনায়ক হওয়ার পেছনে ‘আত্ম-অনুভূতি’ই সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল ম্যাশের। তিনি মনে করেন, তামিম যদি ‘আত্ম-অনুভূতি’কে অনুসরণ করতে পারেন, তা হলে তার ৫০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডের চেয়ে ভালো করা কঠিন হবে না।

সোমবার ফেসবুকে আলাপকালে তামিমকে উদ্দেশ্য করে মাশরাফি বলেন, এটি করো, সেটি করো, বোলার পরিবর্তন করো– এভাবে অনেকেই অনেক ধরনের পরামর্শ দেবে। কিন্তু আপনাকে ‘মনের অনুভূতি’কে প্রাধান্য দিতে হবে।

তিনি বলেন, যদি আপনার আত্ম-অনুভূতি শুনে হারতে হয়, তবে রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারবেন। কিন্তু অন্যের কথা শুনে তা করলে, আপনি মনে শান্তি পাবেন না। তাই নিজের মনের অনুভূতির প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে।

আলাপকালে অতীতের স্মৃতি তুলে ধরেন তামিম। তিনি বলেন, কঠিন সময়ে মাশরাফিকে অনেকবার বলা হয়েছে– অফস্পিনারের পরিবর্তে আক্রমণে পেসার আনার জন্য। কিন্তু আমার কথা না শুনে উনি স্পিনারই ব্যবহার করেছেন এবং সাফল্যও পেয়েছেন।

তামিম বলেন, মাশরাফির স্পিন দিয়ে সাফল্য পাওয়ার কৌশলে অবাক হয়েছি।

তিনি জিজ্ঞাসা করেন, এটি কীভাবে ভালো কাজ করেছে। জবাবে নড়াইল এক্সপ্রেস বলেন, নিজের আত্ম-অনুভূতিকে অনুসরণ করেছিলাম। হ্যাঁ, আপনি ওই সময় আমাকে পেসার আনতে বলেছিলেন, সেটি যৌক্তিক ছিল। কিন্তু আমি আত্ম-অনুভূতিতে বিশ্বাস রেখেছি, যা আমাকে স্পিনার আনতে বলেছে। এটি সত্যিই ভালো কাজ করেছে। তবে সর্বদা করেনি। তবে আমি যা বলতে চেয়েছিলাম, তা যেন মন থেকে শুনতে পাওয়া যায়।

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও নিজের আত্ম-অনুভূতিকে বিশ্বাস করেন মাশরাফি। সাকিব আল হাসানকে তিন নম্বরে খেলানোর পক্ষে ছিলেন তিনি। কিন্তু দলের অন্যান্য সদস্যের মত ছিল না।

ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক বলেন, যদিও বিশ্বকাপে সাকিবের তিন নম্বরে ব্যাটিং নিয়ে অনেকেই অনেক কিছু বলেছিলেন। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, তার মতো খেলোয়াড়ই চাপ মোকাবেলা করতে সক্ষম। আমার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, উনি যদি দুটি ম্যাচে ব্যর্থ হন, উনার চেয়ে কেউই বেশি চিন্তিত হবেন না। আমি তাকে পুরোপুরি সমর্থন করেছি। কারণ উনি ওয়ানডাউনে বড় ধরনের প্রাধান্য বিস্তার করতে সক্ষম হবেন।

মাশরাফির সমর্থন পেয়ে বিশ্বকাপে সেরা পারফরম্যান্সই করেছেন সাকিব। রেকর্ড পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। ৮ ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফসেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেন দেশসেরা ক্রিকেটার। ব্যাটিং গড় ৮৬ দশমিক ৫৭ এবং স্ট্রাইক রেট ৯৬ দশমিক ০৩। বল হাতেও দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। শিকার করেন ১১ উইকেট। এতে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৫০০-এর বেশি রান এবং ১০ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়েন সাকিব।

তবে বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে তামিমের অভিজ্ঞতাটা মোটেও সুখকর নয়। বিশ্বকাপের পর শ্রীলংকার মাটিতে তিন ম্যাচে ওয়ানডে সিরিজে তার নেতৃত্বে হোয়াইটওয়াশ হন লাল-সবুজ জাসির্ধারীরা।

মাশরাফি পরামর্শ দেন মাঠের বাইরের ভূমিকা তামিমকে নতুন নেতৃত্বে সহায়তা করবে। ম্যাশ বলেন, বিসিবি আপনাকে দীর্ঘসময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দিয়েছে। কিন্তু এটি আপনার ওপর নির্ভর করে। আপনাকে এটি যথাযথভাব কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, আপনি শ্রীলংকা সফর সঠিকভাবে গ্রহণ করেননি। কিন্তু এখন আপনাকে দেখছি– আমি মনে করি, আপনি সঠিক পথে আছেন। দেশের ক্রিকেট শিগগির নতুন ধাপে পা রাখবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে