লক্ষ্মীপুরে ঘরে একা পেয়ে হীরা মণি (১৪) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার দিনে-দুপুরে সদর উপজেলার হামছাদী ইউনিয়নের পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ সময় সন্দেহভাজন হিসেবে আরিফ ও সুমন নামে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। মৃত হীরা মণি পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের হারুনুর রশিদের মেয়ে ও স্থানীয় পালেরহাট পাবলিক হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এ ঘটনার পর সদর মডেল থানার পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন, দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম ও পালেরহাট পাবলিক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন তারা।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হীরা মণির বাবা হারুন ক্যানসারে আক্রান্ত। তার বাবা ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি। মা ও ছোট দুই ভাই-বোন বাবার সঙ্গে ঢাকায় হাসপাতালে রয়েছে। হীরা মণি হামছাদি ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে নানার বাড়িতে ছিল।
শুক্রবার সকালে সে নিজেদের বাড়ি পশ্চিম গোপীনাথপুরে আসে। ঘরে সে একাই ছিল। এর মধ্যে সে পাশের এক বাড়িতে গিয়ে কিছু সময় গল্প করেছিল। এরপর সে আবার ঘরে চলে আসে। দুপুর ২টার দিকে পাশের বাড়ির এক নারী তাকে ডাকতে ডাকতে ঘরে আসেন। ঘরে ঢুকেই বিবস্ত্র অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখেন ওই নারী। তার শরীর ছিল খাটে, পা মাটিতে ছিল। তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত হীরা মণির মামা শাহজাহান বলেন, হীরা মণি আমাদের বাড়িতে ছিল। সকালে তাকে পালেরহাট নামিয়ে দিয়ে যাই। বিকেলে এমন ঘটনা শুনতে হবে কল্পনাও করিনি। যারা তাকে হত্যা করেছে তাদের কঠিন বিচার চাই।
পালেরহাট পাবলিক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন খান বলেন, হীরা মণি মেধাবী ছাত্রী ছিল। যারা তাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম বলেন, ঘটনাটি খুবই বীভৎস। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিচার দাবি করছি। যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছাত্রীকে উদ্ধার ও আলামত জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাশের বাড়ির দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।