প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন নাইজেরিয়ার গবেষকরা। ভ্যাকসিনটি বিস্তৃত পরিসরে বাজারে আনতে এবং বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে ১৮ মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আফ্রিকার দেশটির গবেষকরা। খবর আনাদোলুর।
কোভিড-১৯ বিষয়ক গবেষণা দলের প্রধান ড. ওলাদিপো কোলাওল বলেন, ওষুধ আবিষ্কারের মাধ্যমে এ ধরনের বৈশ্বিক মহামারীর সমাধান দিতে পারাটা আমাদের জন্য আবেগের। নাইজেরিয়ার এ গবেষকের দাবি, কোভিড-১৯ ঠেকাতে কার্যকর এ ভ্যাকসিন এখন বাস্তবতা।
নাইজেরিয়ার এডা প্রদেশের অ্যাডিলেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শুক্রবার ড. ওলাদিপো বলেন, ‘ভ্যাকসিনটি একেবারেই নির্ভেজাল। আমরা বেশ কয়েকবার ভ্যাকসিনটি যাচাই করেছি। এটি আফ্রিকানদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হলেও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জন্যও এটি কাজ করবে। এটি ভুয়া হতে পারে না। ভ্যাকসিনটি দৃঢ়প্রত্যয়ের ফল। অনেক বৈজ্ঞানিকের প্রচেষ্টায় ভ্যাকসিনটি তৈরি হয়েছে।’
আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, ট্রিনিটি ইমিউনোডিফিসিয়েন্ট ল্যাবরেটরি ও হেলিক্স বায়োজেন কনসাল্টের ২০ হাজার মার্কিন ডলার অর্থায়নে এ ভ্যাকসিন গবেষণা প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল।
ড. ওলাদিপো বলেন, সম্ভাব্য সর্বোত্তম ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটস বাছাইয়ের জন্য আফ্রিকাজুড়ে করোনাভাইরাসের নমুনা থেকে জিনোম সংগ্রহ করেছে তার দল। এখনও ভ্যাকসিনটির কোনো নাম দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিনটি ব্যাপকভাবে ব্যবহারের জন্য অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিষেধকটি নিয়ে বৃহৎ পরিসরে গবেষণা, বিশ্লেষণ ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এই মহামারীতে রোববার পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮৯ লাখ ১৪ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৩৭ লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫৪ হাজার ৫০৩ জন (২ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। মারা গেছেন ৪ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যানুসারে, নাইজেরিয়া ১৯ হাজার ৮০৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটিতে নাইজেরিয়ার ৫০৬ জন মারা গেছেন।
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে চূড়ান্ত কোনো প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তবে প্রায় এক ডজন সম্ভাব্য ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।