মানসিক চাপে ছিলেন ইউএস-বাংলার পাইলট আবিদ

ডেস্ক রিপোর্ট

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস বাংলার পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং উদ্বিগ্ন ছিলেন ছিলেন বলে দাবি করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট। নেপাল সরকারের তদন্ত কমিটি বরাত দিয়ে পত্রিকাটি দাবি করেছে, অবতরণের সময় পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ারকে অসত্য তথ্য দিচ্ছিলেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার দাবি করে কাঠমান্ডু পোস্ট জানায় যাত্রাপথে বিমানের ককপিটে বসে অনবরত ধূমপান করছিলেন ক্যাপ্টেন আবিদ।

পাইলট সম্পর্কে কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি কন্ট্রোল টাওয়ারকে অসত্য তথ্য দিয়েছেন। বিমানের ককপিটে অনবরত ধূমপান করেছেন এবং ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নারী সহকর্মীকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলেছেন। কয়েকবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। একদিন আগে পদত্যাগের পরিকল্পনা করেছিলেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাবেক এই পাইলটের সাড়ে ৫ হাজার ঘণ্টার উড্ডয়নের রেকর্ড ছিল। তবে তিনি ধূমপানের অভ্যাস থাকার তথ্য বিমান সংস্থার কাছে গোপন করেছিলেন। এ থেকে তদন্তকারীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন ককপিটে থাকার সময়ে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।

তদন্তকারীরা ওই রিপোর্টে লিখেছেন, ‘ককপিটের ভয়েস রেকর্ডারের তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি ক্যাপ্টেন প্রচণ্ড মানসিক চাপ মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এছাড়া তাকে বিষণ্ন ও কম ঘুমের সমস্যায় থাকা মানুষ মনে হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন।’ ওই ভয়েস রেকর্ডারে ককপিটে তার ও তার সহকারী পাইলটের মধ্যে এক ঘণ্টার কথোপকথন রেকর্ড হয়েছিল। কথোপকথনের একপর্যায়ে দেখা গেছে চিন্তিত পাইলট পরিস্থিতিগতভাবেও সচেতন ছিলেন না বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তদন্তকারীরা।

ঘটনার পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর নেপাল সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিশেষ সংবাদ প্রকাশ করেছে নেপালের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্ট।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অবতরণের মাত্র ছয় মিনিট আগেও আবিদ সুলতান জানিয়েছিলেন ‘গিয়ার ডাউন ও লক’ আছে। তবে সহকারী পাইলট পৃথুলা রশিদ চূড়ান্ত অবতরণের সময় জানিয়েছিলেন গিয়ার ডাউন ছিল না। এর প্রায় মিনিট খানেক পর পাইলট গিয়ার ডাউন করেন।

গত ১২ মার্চ সোমবার ৬৭ জন যাত্রী ও চার জন কেবিন ক্রু-সহ ইউএস-বাংলার এয়ারলাইন্সের বিএস২১১ উড়োজাহাজ ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে। উড়োজাহাজটি নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়ে ৫১ জন নিহত হন৷ তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশী৷ এ ঘটনায় ২০ জন প্রাণে বেঁচে ফেরেন। ঘটনার পরপরই বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ পাল্টিপাল্টি দোষারোপ করে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে