মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত হলেন ট্রাম্পের প্রার্থী বিচারপতি অ্যামি কোনে ব্যারট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে সিনেটে ৫২-৪৮ ভোটে জিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন ব্যারট। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ ঘটনা নজিরবিহীন।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভোটের আগে ব্যারটের এই নিয়োগ ট্রাম্পের বড় জয়। অনেকেই মনে করেছিলেন, শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের এই নিয়োগ ভোটের আগে করাতে পারবেন না ট্রাম্প। বস্তুত, ব্যারট নিযুক্ত হওয়ায় সুপ্রিমকোর্টের নয় সদস্যের বেঞ্চে ছয় জন কনসারভেটিভ বিচারপতি জায়গা পেলেন। আগামী দিনে যেকোনো রায়ের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর ডয়চে ভেলের
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মুখে কি সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন নিয়োগ হওয়া উচিত? দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ডেমোক্র্যাটরা এই বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছিল। তাদের বক্তব্য, সুপ্রিমকোর্ট দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেখানে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের হাত থাকে। প্রেসিডেন্ট বিচারপতি মনোনীত করেন। ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মুখে হওয়া অনুচিত।
ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় নাও ফিরতে পারেন। নতুন প্রেসিডেন্ট চার বছরের জন্য ক্ষমতায় আসতে পারেন। বিচারপতি মনোনয়নের সুযোগ তার পাওয়া উচিত।
রিপাবলিকানদের যুক্তি অবশ্য ভিন্ন। তাদের বক্তব্য, রিপাবলিকানের বদলে ডেমোক্র্যাটরা যদি এখন ক্ষমতায় থাকত, তা হলেই তারা উল্টো কথা বলতো। কারণ, তখন ক্ষমতা তাদের হাতে থাকত। রিপাবলিকানদের বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের কোনো সম্পর্ক নেই। সিনেটের মাধ্যমেই বিচারপতির নিয়োগ হয়। সেখানে সিনেটররা ভোট দেন। সেই ভোটে জিতেছেন বলেই ট্রাম্প মনোনীত প্রার্থী ব্যারট সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ পেয়েছেন।
সোমবার রাতে এ বিষয়ে ভোটাভুটি হয়। একজন রিপাবলিকান সিনেটর ট্রাম্পের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। সে কারণেই শেষ পর্যন্ত ফল হয়েছে ৫২-৪৮। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আগে হলে এই ভোটে সুপ্রিমকোর্টে নিয়োগ পেতেন না ব্যারট। জেতার জন্য তার অন্তত ৬০টি ভোট লাগতো। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা যথেষ্ট ছিল না। কিছুদিন আগেই সংবিধান সংশোধন করে সে নিয়ম বদলানো হয়েছে। তারই সুযোগ পেয়েছেন ব্যারট।
স্বাভাবিকভাবেই ব্যারটের এই জয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। জানিয়েছেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্রের এখনো নিরপেক্ষ আইনের শাসন কায়েম আছে। রাতেই ব্যারটের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ট্রাম্প। তবে মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নেবেন ব্যারট।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী দিনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দিতে পারেন ব্যারট। যার মধ্যে অ্যাবর্শনের মতো বিষয়ও আছে। কয়েক দশক আগে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাবর্শনের পক্ষে রায় দিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট। সেই রায়কে ওভার রুল করতে পারেন কনসারভেটিভ ব্যারট।