বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু মানুষকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্ব একটি ভ্যাকসিনের অপেক্ষা করছে, এটি না আসা পর্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) প্যারিস পিস ফোরামের এক বৈঠকে এসব কথা বলেছেন তিনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রধান বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির ১১ মাসে বিশ্বজুড়ে ১২ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এই সময়ে বিশ্ব অর্থনীতি লাইনচ্যুত হয়েছে এবং প্রত্যেকদিন বিশ্বজুড়ে হাজারও মানুষের প্রাণ গেছে।
করোনাভাইরাসের প্রতিশ্রুতি কিছু ভ্যাকসিন আশা দেখালেও সেগুলো চূড়ান্ত কার্যকর প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকির বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, আমরা করোনাভাইরাসের কারণে ক্লান্ত হয়ে থাকতে পারি, কিন্তু করোনা ক্লান্ত হয় না। ইউরোপীয় দেশগুলো এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও ভাইরাসটির উল্লেখযোগ্য তেমন পরিবর্তন ঘটেনি। এমনকি এটি ঠেকানোর কোনও ব্যবস্থাও নেই।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের অনেক দেশে ভাইরাসটির বিস্তার রোধ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে নতুন করে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে।
সোমবার মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার এবং জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেক বলছে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৯০ শতাংশ কার্যকর। ভ্যাকসিনের বৃহৎ পরিসরের এবং শেষ ধাপের পরীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে এই কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ফাইজার ও বায়োএনটেক।
তবে ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত এখনও জানা যায়নি। শেষ ধাপের পরীক্ষা চলমান থাকায় এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার চূড়ান্ত তথ্য পেতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সুষ্ঠু ও সমবণ্টনের কথা স্মরণ করিয়ে টেড্রোস আধানম বলেন, একটি ভ্যাকসিন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু আমরা একটি ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা এবং আমাদের সব ডিম একটি ঝুড়িতে ফেলতে পারি না।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। করোনায় বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত ১২ লাখ ৯১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কাড়লেও আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ২৫ লাখের বেশি।
সূত্র : রয়টার্স।