আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছি। নিজেরাই বাস পুড়িয়েছে আবার এটার জন্য নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা অত্যন্ত হাস্যকর। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই বিএনপির সাথে যুক্ত।
আজ রোববার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলক কক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রীর বলেন, আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখেছেন নিতাই রায় চৌধুরীর সাথে তাদের দলের নেত্রী ফরিদা বেগমের কথোপকথন। তিনি বলছেন, যুবদলের ছেলেরা বাসে আগুন দিয়েছেন। প্রথম বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনাটিও কিন্তু নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে একটি সরকারি বাসে। এই অপরাজনীতি যারা করে তারা কখনও জনগণের রাজনৈতিক দল হতে পারে না।
বিএনপি কানাডার আদালতে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো সন্ত্রাসী দলের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না, আজকে সেটি হচ্ছে বড় প্রশ্ন। তাই আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাব। আপনারা অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন। এই অপরাজনীতির কারণে আপনারা যোজন যোজন দূরে চলে গেছেন। আপনারা যদি অপরাজনীতি অব্যাহত রাখেন তাহলে আপনারাই আপনাদেরকে নিঃশেষ করে দেবেন, অন্য কারো প্রয়োজন নেই।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, এই অপরাজনীতি করে আবার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা, আপনারা সন্ত্রাসী দলের পাশাপাশি প্রচণ্ড একটি মিথ্যাবাদী দলেও রূপান্তরিত হয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি অবাক হয়ে যাই কীভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে যান। মিথ্যা বলার ক্ষেত্রে যদি কোনো পুরস্কার থাকত দুনিয়াতে, এক্ষেত্রে মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রথম পুরস্কার পেতেন। মিথ্যা কথা বললে আয়ু কমে যায়, এটি আলেমওলামারা বলেন। মির্জা ফখরুর ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব অপরাজনীতি ও ক্রমাগত মিথ্যা বলার রাজনীতি থেকে দয়া করে বের হয়ে আসুন।
ভোটার উপস্থিতি কম ও ভোটার টার্ন আউট কম থাকায় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে এটা প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ভোটার উপস্থিতি কম, ভোটার টার্ন আউট কম- এটিতেই প্রমাণ হচ্ছে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট না হলে তাহলে ভোটার টার্ন আউট অনেক বেশি হত। যারা ভোট দিতে গিয়েছে তারাই শুধু ভোট দিয়েছে। এজন্য ভোট কম পড়েছে।
উপনির্বাচনে বিএনপি দুটি উদ্দেশে অংশ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, দুটি উদ্দেশে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে- একটি উদ্দেশ্য ও প্রধান উদ্দেশ হচ্ছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, দ্বিতীয় উদ্দেশ হচ্ছে দলকে টিকিয়ে রাখা। তাদের অভিযোগ তথাকথিত। সব নির্বাচনের সময় তারা এই অভিযোগ করে থাকে।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে পৃথিবীর যেখানেই ভোট হচ্ছে সেখানে ভোটার উপস্থিতি কম হচ্ছে। আমাদের দেশে এই পরিস্থিতিতে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটাই স্বাভাবিক।
বিএনপি জয়লাভের উদ্দেশে ঢাকা-১৮ উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথম দিন থেকেই তারা অভিযোগের বাক্স নিয়ে বসেছিল।
হাছান বলেন, দেশের মানুষ যখন করোনাভাইরাস নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত তখন গত বৃহস্পতিবার বিএনপি আবার সেই পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। তারা বাস পোড়ানো অর্থাৎ মানুষ পোড়ানোর পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে; যেটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, নিন্দনীয় এবং তাদের এই অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধীতাকারীরা ভাস্কর্য ও মূর্তির পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
এজন্য তাদের খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই বলেও মত দিয়েছেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ইরাক, ইরান, লেবানন, সিরিয়া, তুরস্ক, ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশে বহু ভাস্কর্য আছে। যারা এই ধরণের কথা বলে তারা ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। আমি আশা করব তারা এই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন।
শুধু বিরোধিতা নয়, মূর্তি স্থাপন করলে তা ভেঙে ফেলারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, এমনটা জানানোর পর তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কেউ যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে। যারা (বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে) প্রশ্ন তুলেছে তারা ক্ষুদ্র একটি অংশ, এটিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না।