মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
দিনটি স্মরণে ঢাকা ও টাঙ্গাইলসহ দেশে বিভিন্ন স্থানে পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনাসভা এবং দোয়া মাহফিল।
স্থানীয় প্রশাসন, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
অবহেলিত মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন এই নেতা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানের শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন, প্রবীণ বয়সে ১৯৭৬ সালে ফারাক্কা লংমার্চসহ ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে রেখে গেছেন তাঁর কর্মের ছাপ।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তাঁর জীবনের বড় অংশই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। তিনি কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন- সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলীর সভাপতিও ছিলেন তিনি।
তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লংমার্চে নেতৃত্ব দেন তিনি।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে আহ্বায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে সদস্য সচিব করে ‘মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির পক্ষ থেকে ঢাকা ও টাঙ্গাইলে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে সেমিনার, আলোচনা সভা ও মাজার জিয়ারত।
ভাসানী ফাউন্ডেশনও নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভাসানীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া, কাঙালিভোজ এবং আলোচনা সভা। এ ছাড়া অনেক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন শ্রদ্ধার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে।