করোনা ভাইরাস মহামারি স্তব্ধ করে দিয়েছে গোটা বিশ্ব। দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। কাজ হারিয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে মহামারির সময়ে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এসব মানুষের মানবিক সাহায্য প্রয়োজন হবে ২০২১ সালেই। বিশ্বের মানুষের প্রতি ৩৩ জনের মধ্যে একজনের মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন। এজন্য বিশাল অঙ্কের অনুদান চেয়েছে সংস্থাটি। খবর রয়টার্সের।
করোনাকালে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা বিপুল পরিমাণ বাড়ার কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা মার্ক লোকক। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ৩৩ জনের মধ্যে একজনের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে। এ জন্য ৩ হাজার ৫শ’ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
মার্ক লোকক বলেন, ‘আগামী বছর যাদের মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে তারা সবাই যদি একটি দেশে বাস করতেন তাহলে সেটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ হতো। এই মহামারি বিশ্বের সবচেয়ে ভঙ্গুর ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির দেশগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
জাতিসংঘের এত লোককে মানবিক সাহায্য করার সক্ষমতা নেই জানিয়ে লোকক বলেন, আমরা সবসময়ই হতদরিদ্র মানুষদের দুই-তৃতীয়াংশের কাছে পৌঁছাতে চাই। বাকি যারা থেকে যাচ্ছে তাদের রেড ক্রসের মতো অন্যান্য দাতব্য সংস্থা সহায়তার চেষ্টা করবে, যাতে সেই শূন্যতা পূরণ করা যায়।
মার্ক লোকক জানান, ‘চলতি বছর দাতা দেশগুলো রেকর্ড ১ হাজার ৭শ’ কোটি মার্কিন ডলার দান করেছে। যা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। ২০২১ সালের জন্য আমাদের ৩ হাজার ৫শ’ কোটি (৩৫ বিলিয়ন) ডলার প্রয়োজন। যা একটি বিশাল অঙ্কের অর্থ। কিন্তু ধনী দেশগুলো তাদের জনগণকে মহামারি থেকে সুরক্ষা দিতে যে পরিমাণ ব্যয় করছে তার তুলনায় এই অর্থ খুবই সামান্য।’
২০২১ সালে জাতিসংঘ ৫৬টি দেশে মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দিতে ৩৪টি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি এর মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে চায়।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি মানুষকে ক্ষুধা, যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবেলা করতে হচ্ছে।