করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে চলতি বছরের শুরু থেকেই ‘ঠান্ডা’ ছিল চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠ। তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণার পরপরই সরগরম হয়ে উঠেছে বন্দরনগরীর রাজনীতি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও তার সমর্থকদের প্রকাশ্য তৎপরতা চোখে পড়লেও কৌশলে হাঁটছে বিএনপি।
শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে মহানগর আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসায় অনুষ্ঠিত সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ হোসেন খান এমপি ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তেমন কিছু বলেননি আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিস্ক্রিয় থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ দলের নির্দেশনা না মানলে বহিস্কার করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন।
জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন করে আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ও চারটি ওয়ার্ডে পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। কাউন্সিলর প্রার্থী মারা যাওয়ায় সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৬ এবং ৩০, ৩৭ ও ৪০ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ ডিসেম্বর। তবে ইতোপূর্বে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া প্রার্থীদের নতুন করে দাখিলের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে ইসি।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রার্থীরা। সময়সীমা চূড়ান্ত হলে প্রচারণা শুরুর কথা বলছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমরা গত মার্চে নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচার-প্রচারণাসহ সবধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছিলাম। নির্বাচন স্থগিত হলেও বসে থাকিনি। করোনাকালে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সুরক্ষাসামগ্রীসহ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে সামনের সারিতে ছিলাম। ফলে সবকিছু গোছানো আছে। এখন কমিশন আনুষ্ঠানিক প্রচারণার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানালে প্রচারণা শুরু করব।
তবে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের অভিযোগ নতুন তারিখ ঘোষণার সাথে সাথে বিভিন্নস্থানে বিএনপি নেতাকর্মী ও তার সমর্থকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেতাকর্মীদের বাসায় গিয়ে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। সাধারণ ভোটারদেরও কেন্দ্রে না যেতে বলা হচ্ছে। আমরা ভোটের মাঠে সমান সুযোগ চাই।
রিটানিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। দু’একদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক প্রচারণার দিনক্ষণ প্রার্থীদের জানিয়ে দেয়া হবে।’