উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে আজ শনিবার (সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারাদেশে সর্বনিম্ন। ঠান্ডায় চরম বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। তীব্র ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। গতকাল মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও আজ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, শনিবার কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি সারাদেশের মধ্যে আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এই মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।
কুয়াশার চাদর ভেদ করে দেরিতে সূর্যের দেখা মিললেও তীব্র ঠান্ডার কারণে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা এখনও খুব বেশি নয়। উপজেলা মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বন্যায় বসতবাড়ি হারানো কয়েক হাজার মানুষ অসহায় জীবনযাপন করছেন খোলা আকাশের নিচে। শীতবস্ত্রের অভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে জেলার চরাঞ্চলের সাড়ে চার শতাধিক মানুষ।
একটু উষ্ণতা পাওয়ার আশায় গ্রামাঞ্চলের শীতবস্ত্রহীন মানুষ তাকিয়ে থাকছেন সূর্যের আলোর দিকে। সারাদিন ঠান্ডার তীব্রতার কারণে হাটবাজারেও লোকসমাগম অনেকটাই কম দেখা গেছে।
এদিকে ধুম পড়েছে লেপ-তোশক তৈরির। হতদরিদ্র মানুষ ফুটপাতের দোকানগুলোতে পুরান কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।
পাঁচগাছির মাঝেরচর এলাকার রিকশাচালক ছামাদ জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডায় সকাল থেকে রিকশা বের করার সাহস পাইনি। যাত্রীও থাকে কম।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী সরকার বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা দুর্গম। এখানে প্রায় ১০টি চর রয়েছে। ইউপির চরে বসবাসকারী শীতার্ত মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ইউনিয়নে ছয় হাজার দুশ’র অধিক পরিবার রয়েছে। আমাকে সরকারিভাবে কম্বল দেয়া হয়েছে মাত্র চারশটি। সেগুলো চরাঞ্চলের চারশ বয়স্ক পুরুষ ও নারীর তালিকা করে তাদের মাঝে বিতরণ করেছি। বাকিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
নাগেশ্বরীর ভিতরবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি এক সপ্তাহ আগে ৪৫০টি কম্বল আমার ইউনিয়নের জন্য সরকারিভাবে পেয়েছি। তালিকা করে সেগুলো ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করেছি। এছাড়া এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র পাইনি। বিভিন্ন এনজিও এবং সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, শীত নিবারণের জন্য প্রতিটি উপজেলায় সাত লাখ টাকা করে বরাদ্দ এসেছে। এছাড়া জেলার কর্মহীনদের জন্য ১০ হাজার প্যাকেট খাদ্যশস্য পেয়েছি।