আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরেরও বেশি সময় পরে অবশেষে করোনাপূর্ব অবস্থায় ফিরল তেলের দাম। মহামারির মধ্যে গতবছর এটি নেমে গিয়েছিল ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে ‘কালো সোনা’র দাম। খবর বিবিসির।
অবশ্য তেলের চাহিদা এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দূরে। তবে টিকাদান শুরু হয়ে যাওয়ায় সেটি দ্রুতই করোনাপূর্ব অবস্থায় ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাধারণত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ব্যারোমিটার হিসেবে দেখা হয় তেলের দামকে। করোনার কারণে বছরখানেক ধরে এর অবস্থা ছিল বেশ নাজুক।
তবে একটু একটু করে চাহিদাবৃদ্ধির কারণে গত কয়েক মাসে তেলের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আর চলতি সপ্তাহে এর দাম উঠেছে প্রতি ব্যারেল ৬০ মার্কিন ডলারে, যা সবশেষ করোনা আসার আগে দেখা গিয়েছিল।
ভবিষ্যৎ চুক্তিতে শক্ত অবস্থানে ফিরেছে তেলবাজারের প্রধান বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড। গত নভেম্বর থেকে এপর্যন্ত এর দাম বেড়েছে প্রায় ৫৯ শতাংশ।
সুসময় যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটেরও (ডব্লিউটিআই)। এক বছরেরও বেশি সময় পরে গত সপ্তাহে এর দাম উঠেছে ব্যারেলপ্রতি ৫৫ ডলারের ওপর।
তেলবাজার বিষয়ক সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংস্থা ভ্যান্ডা ইনসাইটসের প্রতিষ্ঠাতা বন্দনা হরি বলেন, গত সপ্তাহে [তেলের] মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় চালক হলো- করোনাভাইরাস পিছু হটছে, এমন ইঙ্গিতের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক ও তেলের চাহিদা পুনরুদ্ধার প্রত্যাশার শক্তিশালী উত্থান।
এর পেছনে অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে উৎপাদক দেশগুলো, বিশেষ করে সৌদি আরব তেল সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া।
গত এপ্রিলে উৎপাদন কমাতে রাজি হওয়ার পর থেকে উৎপাদকরা এপর্যন্ত অন্তত ২১০ কোটি ব্যারেল তেল কম সরবরাহ করেছে, যার ফলে মজুত অনেকটাই কমে গেছে।
গত বছর করোনাভাইরাস মহামারির হানায় তেল শিল্প রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এর দাম নেমে এসেছিল শূন্যেরও নিচে। তবে ধীরে ধীরে সেই সংকট কাটতে শুরু করায় আবারো আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা।