জাবালে নূরের মালিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ডেস্ক রিপোর্ট

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জাবালে নূর বাসের মালিক ও চালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল ডিবির পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম (সিএমএম) আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত ছয় আসামি হলেন— জাবালে নূরের দুই বাসের মালিক শাহাদাত হেসেন ও জাহাঙ্গীর আলম; দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ।

তাদের মধ্যে মালিক জাহাঙ্গীর এবং চালকের সহকারী আসাদ পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতার চারজনের মধ্যে মালিক শাহাদাত, চালক মাসুম ও জুবায়ের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এদিকে মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা আসামি মো. সোহাগ আলী ও মো. রিপন হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি প্রদানের আবেদন করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

অভিযোগপত্রটি বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪ ও ৩৪ ধারায় দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৪ ধারা অনুযায়ী খুন বলে গণ্য নয় এরূপ দণ্ডনীয় নরহত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে মোট ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং ছয় ধরনের আলামত জব্দ দেখানো হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি বাস এবং তিনটি ড্রাইভিং লাইসেন্স।

গত ২৯ জুলাই বেপরোয়া গতিতে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস হোটেল র্যাডিসনের বিপরীত দিকে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের পাশে রাস্তায় অপেক্ষারত শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর ওপর উঠিয়ে দিয়ে চালক পালিয়ে যান। এ দুর্ঘটনায় একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল করিম রাজীব নিহত হয়। এছাড়া গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সোহেল রানা, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইমরান চৌধুরী, মেহেদী হাসান জিসান, রাহাত, সজিব, জয়ন্তি, প্রথম বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়া, এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তৃপ্তাসহ আরো কয়েকজন। ওই ঘটনায় সেদিন রাতেই ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা দায়ের করেন নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম।

দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এক সপ্তাহ ঢাকার সড়ক অচল থাকে। আন্দোলনের মুখে সরকার সড়কে নিরাপত্তায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তেজনা ছড়ায়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে