ফায়ারিং স্কোয়াডে ১৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টায় ১৪ জনের ফাঁসি
ছবি : সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় হেলিকপ্টার অবতরণের স্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রাখার মামলায় দণ্ড পাওয়া ১৪ জনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিচারক বলেন, ‘দণ্ডবিধির ১২১/৩৪/১০৯ ধারায় অপরাধের জন্য আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। একটি ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে আসামিদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ হইল। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষের কোনো অসুবিধার কারণ থাকলে প্রচলিত নিয়ামানুসারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের প্রত্যেকরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হলো। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২১/৩৪/১০৯ ধারায় চরম দণ্ড প্রদান করায় দণ্ডবিধির ১২১ ক/২২২/১২৪ “ক” ধারা মতে কোনো দণ্ড প্রদান করা হলো না।’

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার, রাশেদুজ্জামান, তারেক হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা, সারোয়ার হোসেন মোল্লা, আনিসুল ইসলাম,মাওলানা আমিরুল ইসলাম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, আজিজুল হক, লোকমান, ইউসুফ শেখ মো. এনামুল হক ও মোছাহেব হাসান।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করে গণতান্ত্রিক, বৈধ সরকার উৎখাত করার উদ্দেশ্যে কোটালিপাড়ার সভা মঞ্চে বোমা পুঁতে রাখা হয়। স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের পর থেকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এমনকি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে ধ্বংস করে দেয়। সেই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকে তাকেও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। বারবার তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। এজন্য যাতে হুজি, জেএমবি ও ইসলামি জঙ্গিরা এই ধরনের ঘটনা পুরনাবৃত্তি করতে না পারে। তাই তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমা উদ্ধার হওয়ার পরদিন ওই স্থানেই শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় কোটালীপাড়া থানায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা করে পুলিশ।

হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলায় ২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন সিআইডির এএসপি আব্দুল কাহার মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের জন্য আদেশ দেন। এরপর বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে আদালত মোট ৫০ সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন