সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহিংস অপতৎপরতা রুখতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে এবং সকল জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (২৮ মার্চ) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহিংস অপতৎপরতা রুখতে হলে আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, তারা যতবেশি এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে দেশের জনগণ ততবেশি ইতিহাসের কাছে ফিরে যাবে।
তিনি বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অকাট্য সত্য হিসেবে প্রমাণিত যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই বাঙালির স্বাধীনতার ঘোষক। স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য সত্তরের নির্বাচনে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুই একমাত্র ম্যানডেটপ্রাপ্ত ছিলেন। অন্য কারোর স্বাধীনতা ঘোষণার কোনো বৈধ অধিকার ছিল না। বিএনপি নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণার অন্যতম পাঠক জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক কখনো স্বাধীনতার ঘোষক হতে পারে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাধীনতার এতবছর পার হলেও পাকিস্তান একাত্তরের নৃশংস বর্বরোচিত গণহত্যার জন্য একদিন দুঃখ প্রকাশ করেনি, তারা ক্ষমা চায়নি। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়নি। আমাদের যে পাওনা সে পাওনা আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয়নি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রে ধর্মের লেবাস পরিয়ে দেন। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করেন। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়াও স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে বাংলাদেশের সবুজের পটভূমিতে লাল সূর্যের পতাকা তুলে দেন।
কাদের বলেন, বিএনপি যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করে তখন জাতির সামনে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের নৈতিক অধিকার তাদের আছে কিনা। ২৫ ও ২৬ মার্চ পালন না করে করোনার ভুয়া অজুহাতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়া আরেক রহস্যের জন্ম দিয়েছে।
এসময় ভারতবিদ্বেষী যে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ জাতীয় মসজিদে যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সফলতা যাদের গাত্রদাহ, সেই বিএনপি এই অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ প্রমুখ।