প্রথম জয়ের প্রত্যাশায় টসে জিতে ফিল্ডিং নেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। তার সেই সিদ্ধান্তের সুফল এনে দেন হোল্ডার-রশিদ খান।
আইপিএলের ধুমধাড়াক্কাময় ম্যাচে দেড়শ রানের বেশি করতে দেয়নি রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে।
জেসন হোল্ডার ও রশিদ খানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৯ রান করতে পারে আরসিবি।
কিন্তু এমন দুর্দান্ত বোলিংয়ের সফলতাকে ব্যর্থতায় ঢেকে দিয়েছেন হায়দরাবাদের ব্যাটসমানরা। নির্দিষ্ট লক্ষ্য থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয়ে যায় হায়দরাবাদের। অর্থাৎ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও হার মানল ডেভিড ওয়ার্নার এন্ড কোং। আর মাত্র ৬ রানে জয় নিয়ে চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়াম ছাড়ল কোহলি এন্ড কোং। শেষ চার ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয় বঞ্চিত হলো হায়দরাবাদ।
আরসিবির ছোড়া ১৫০ রানের লক্ষ্য ছোঁয়ার তাড়ায় গত ম্যাচের মতো এবারও ব্যর্থ ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা। ৯ বল নষ্ট করে করলেন মাত্র ১। মোহাম্মদ সিরাজের পেস বুঝলেনই না তিনি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন অধিনায়ক ওয়ার্নার। এই অসি তারকার ব্যাট থেকে আসা ৫৪ রানই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। কাইল জেমিসনের পেসে আউট হওয়ার আগে মনীষ পাণ্ডেকে নিয়ে ৮৩ রানে জুটি গড়েন।
১৩তম ওভারে ৩৭ বলে ৭ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হন ওয়ার্নার। এরপর বেশি সময় মনীষকে সঙ্গ দিতে পারেননি ইংলিশ তারকা জনি বেয়ারস্টো। ১২ বলে ১২ রান করে শাহবাজের বলে সাজঘরে ফেরেন।
শাহবাজের পরের বলেই আউট হন মনীষ। ৩৮ বলে ৩৮ রানে সমাপ্তি ঘটে। শাহবাজের পর পর দুই বলে ২ উইকেটের বিদায়ে ব্যাকফুটে চলে যায় হায়দরাবাদ। তবুও যদি ম্যাচে ফিরতে পারত। কিন্তু শাহবাদ তাও হতে দিলেন না। একই ওভারের শেষ বলে আউট করেন আবদুল সামাদকে। রানের খাতাই খুলতে পারেননি সামাদ।
অর্থাৎ ৬ বলের ব্যবধানে হায়দরাবাদের স্কোর ২ উইকেচে ১১৫ রান থেকে ৫ উইকেটে ১১৬তে গিয়ে ঠেকে। মাত্র ১ রানেই নেই ৩ উইকেট।
এমন ম্যাচে কি আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব? তবুও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যান হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেটের পতন ঘটতে থাকে।
শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রানের। জয়ের আশার আলো তখনও জিইয়ে হায়দরাবাদের। ক্রিজে স্পিন অলরাউন্ডার রশিদ খান। শেষ ওভারটি পাটেলের হাতে তুলে দেন কোহলি। শুরু হয় টান টান উত্তেজনা। ওভারের তৃতীয় বল নো দিলে আর তাতে ৪ হাঁকান রশিদ। এতে উত্তেজনা চরমমাত্রায় গিয়ে পৌঁছে। কারণ তখন ৪ বলে নিতে হতো মাত্র ৮ রান।
আর এমন ম্যাচও হাতছাড়া করল হায়দরাবাদ। ওই ৮ রান নিতে গিয়ে রশিদ খান ও নাদিম। শেষ বলে ভুবনেশ্বর ১ রান নিলে হায়দরাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৪৩ রান।
৬ রানে জয় পায় কোহলির আরসিবি। এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ২৯ বলে ৩৩ রানের কেমিও ইনিংস খেলেন আরসিবির অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
জেসন হোল্ডারের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর দেবদূত পাডিক্কেলকে ১১ রানে ও শাহবাজ আহমেদকে ১৪ রানে ফেরান যথাক্রমে পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও শাহবাজ নাদিম।
আরসিবির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি শিকার করেন স্পিনার রশিদ খান। মারকুটে ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সকে মাত্র ১ রানের বেশি করতে দেননি রশিদ। ৫ বলে ১ রান করেই রশিদের বলে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ভিলিয়ার্স।
রশিদের পরের শিকার স্পিন অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর। ১১ বলে ৮ করে রশিদ খানের ঘূর্ণি পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে হাল ধরেছেন অসি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দেখেশুনে খেলে ৪১ বলে ৫৯ রান জমা করেন। যা প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। ম্যাক্সওয়েলকে হোল্ডার ফেরালে আর কেই দাঁড়াতে পারেনি। ৮ উইকেটে ১৪৯ রান তুলতে সক্ষম হয় আরসিবি।