রেলস্টেশনে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর নির্দেশদাতাসহ হেফাজত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও দ্রুত মেরামত করে ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। এ দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচেতন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ব্যানারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার কয়েক হাজার মানুষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি দেশ বরেণ্য কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহিদ খান লাভলু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন, জেলা চেম্বারের সহসভাপতি শাহআলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র হোসনে আরা বাবুল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্টেশনে কোনো ট্রেন যাত্রাবিরতি না করায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এছাড়া পূর্বাঞ্চল রেলপথের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ স্টেশন থেকে রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সেজন্য দ্রুত স্টেশনটি সংস্কার করে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি চালু করা জরুরি।
এছাড়া তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে হেফাজতের ব্যানারে মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ওই দিন বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা চালিয়ে জাতির জনকের ম্যুরাল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশসুপারের বাসভবন, জেলা জজের বাসভবন, জেলা সিভিল সার্জনের অফিসসহ ভাংচুরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।
এ ছাড়াও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকরা শহীদ ধীরেন্দ্রসনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, সুর সম্রাট স্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দির,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীরেত পরিণত করে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই ঘটনার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।