ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যারা ইসলামের নাম ব্যবহার করে রেলস্টেশন, ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্টার অফিস পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে তাদেরকে আলেম নামের জালেম হিসেবে অবহিত করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ভূমি অফিস পুড়িয়ে দিলে কী কোনো লাভ হবে? সাব-রেজিস্ট্রি অফিস পুড়িয়ে দিলে ইসলাম ধর্মের কী লাভ হবে? ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যারা এসব পুড়িয়েছে তারা কারা? তারা নিজেদেরকে আলেম বলে দাবি করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা আলেম নয়, তারা আলেম নামের জালেম।
তিনি বলেন, এখানে উপস্থিত যেসমস্ত আলেম তাদের ঐ ধরনের কাজকে সাপোর্ট করেন বা এখানে কেউ যদি থেকে থাকেন; আমি বলছি আপনার শুধরাইয়া যান। এবং সেই জন্যই আলেমদের ট্রেইনিংয়ের দরকার।
সিঙ্গারবিল-চান্দুরা রোডের সংস্কার বিষয়ে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, যে কাজটি নিয়ে সাধারণ মানুষ খুব বিরক্ত ছিল, যদিও আমি এমপি হওয়ার পরে ঐ রাস্তাটি তিনবার সংস্কার করিয়েছি। বর্তমানে ঐ রাস্তার কাজ পুনরায় মেরামত করা হচ্ছে। আমাদের মূল কন্ট্রাক্টর মারা যাওয়ায় কাজটির সাময়িক বিরতি ছিল কিন্তু তার উত্তরাধিকারীরা কাজটি সম্পন্ন করে দিচ্ছেন। তারা সময়মতোই কাজটি শেষ করে দিবেন বলে আমাকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ এই কাজগুলো শেষ হলে, আমাদের বড় কাজগুলো প্রায় সম্পন্ন হয়ে যাবে। তখন শুধু বাকি রবে শেখ হাসিনা সড়ক। এটির তিনটি সেতুর কাজ প্রায় সম্পন্ন, আমরা আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছাতে পারব ইনশাআল্লাহ।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলাপ্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান, উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা মুকাই আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দলীয় নেতাকর্মীবৃন্দ।
এদিন মডেল মসজিদ উদ্বোধন ছাড়াও বিজয়নগর উপজেলায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন এবং প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সিঙ্গারবিল থেকে হরষপুর পর্যন্ত ১৭.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তার পুনঃসংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
উল্লেখ, ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে, ধর্মীয় ভুল-ব্যাখ্যা দূর করে ইসলামের সঠিক বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার একযোগে সারা দেশে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদগুলোর উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুষ্টিমেয় লোকের জন্য ইসলামকে দায়ী করা যায় না, কিছু লোক ধর্মের নামে সারাবিশ্বে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। তিনি আরো বলেন, ইসলাম প্রচার প্রসারে করণীয় সব কিছুই করছে সরকার। অন্যায় রোধে ধর্ম যেন আরো জোরালো অবদান রাখতে পারে সে লক্ষ্যেই মডেল মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে।