প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যাদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে যায়, তারাই কিন্তু তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চান না। তবে যাদের ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে না, ইদানিং সবচেয়ে বেশি সোচ্চার তারা। পড়ানোর মতো ছেলে-মেয়ে নাই, তারাই বেশি কথা বলে। কিন্তু যারা যায়, তারা তো চাচ্ছেন না।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের ১৩তম ও বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের বক্তৃতার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষকদের টিকা দিয়েছি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী—কোন টিকা কোন বয়সে দিতে হয়, সেটা অনুসরণ করতে হয়। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ইতোমধ্যে আমরা শিশুদের টিকাদান শুরু করেছি।
তিনি বলেন, ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখবে। কিন্তু সেই লেখাপড়ার জন্য তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব কি-না, তা আমাদের মাননীয় সংসদ উপনেতা একটু বিবেচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ। কিন্তু পড়ালেখা যাতে বন্ধ না হয়, এজন্য সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস চালানো হচ্ছে। এছাড়া আমরা রেডিও উন্মুক্ত করে দিয়েছি। রেডিওর মাধ্যমে যাচ্ছে, অনলাইনে যাচ্ছে। যে যেভাবে সুযোগ পারছেন, পড়ালেখা করছেন। আমরা পড়াশোনা চালিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা বলব, একটু ক্ষতি হচ্ছে। টিকা দিয়ে আমরা কিন্তু সব স্কুল খুলে দেব। কিন্তু আমরা যখন ঠিক সিদ্ধান্ত নিলাম খুলব, তখনই করোনা এমনভাবে মহামারি আকারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল; তার ধাক্কাটা আসলো আমাদের দেশে।
বিরোধীদলীয় উপনেতাকে উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান বলেন, বলার জন্য বলবেন, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু এই ছেলে-মেয়েগুলোকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবেন কি? আমাদের অনেক পরিচিতজন বিদেশে পড়ালেখা করে। আমার নাতিরা পড়ালেখা করে। সেখানে অনলাইনে পড়ালেখা চলে। কিছুদিন স্কুল খুলল, আবার যখন মহামারি ছড়িয়ে পড়ল তখন আবার বন্ধ। এটা শুধু বাংলাদেশ না। এটা সারাবিশ্ব একই অবস্থা। এটা সবাইকে মানতে হবে।
শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনায় এমন কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ নেই, যাদের সাহায্য দেয়া হয়নি। যেহেতু আবার করোনা দেখা দিয়েছে, আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করব। কারও খাদ্য ঘাটতি যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।
করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ঈদের সময় আমরা মানুষকে দেশের বাড়িতে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সেই অনুরোধ তারা শুনেননি। তাতে ফলাফলটা কী হয়েছে? সারাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ল। সবাই যদি আমাদের কথাটা শুনতেন, আজকে এমনভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ত না। এটাই বাস্তবতা। মানুষ আসলে ঈদে গ্রামে যেতে চায়, এটাই সমস্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। শুধু সরকার না আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা মানুষকে করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা প্রণোদনা দিয়েছি বিভিন্ন খাতে।