ট্রেনের টিকিট বিক্রির অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে ঢুকতেই পারছেন না যাত্রীরা। বুধবার সকাল আটটা থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। অনেক যাত্রী সাড়ে আটটা পর্যন্ত রেলওয়ের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেছেন, টিকিট পাওয়া বহুদূর অ্যাপ ও ওয়েবসাইট কাজই করছে না। লোডিং দেখায় শুধু।
ঘণ্টাখানেক চেষ্টার পর অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা গেলেও সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে বলে দেখানো হয়েছে। আর যারা টিকিট কেনার অপশন পর্যন্ত যেতে পেরেছিলেন, তাদের অনেকেও ব্যর্থ হয়েছেন বিকাশে টাকা পরিশোধ করতে না পারায়।
বুধবার সকাল ৮টায় পৃথক পৃথক ডিভাইস থেকে রেলের টিকিট বিক্রির অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ‘রেল সেবা’ তে প্রবেশের চেষ্টা করেন এই প্রতিবেদক। সকাল সোয়া আটটা পর্যন্ত ওয়েবসাইটে ঢোকা যায়নি। ‘দিস সাইট ক্যান নট রিচড’ বার্তা দেখাচ্ছিল। এক ঘণ্টা চেষ্টা করে অ্যাপে যাত্রার দিন, তারিখ ও ট্রেন বাছাইয়ের অপশন পর্যন্ত যাওয়া যায়নি। অ্যাপ শুধু ঘুরছিল এবং লোডিং দেখাচ্ছিল। ওয়েবসাইটে যাত্রার দিন তারিখ এবং ট্রেন সিলেক্টের অপশন পর্যন্ত যাওয়া গেলেও আসন বিন্যাস দেখাচ্ছিল না। পারচেজ অপশন পর্যন্ত যাওয়া যায়নি এক ঘণ্টায়।
অধিকাংশ যাত্রীর একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। বেসরকারি চাকরিজীবী সজিবুল হুদা জানান, ১৬ জুলাই ভৈরব যাবেন। টিকিটের জন্য ঠিক সকাল আটটায় ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করেন। আধা ঘণ্টার চেষ্টায় প্রবেশ করতে পারলেও টিকিট কেনার অপশন পর্যন্ত যেতে পারেননি। লোডিং দেখাচ্ছিল। সজিবুল হুদার প্রশ্ন টিকিট পাচ্ছে কারা?
সাদ বিল্লাহ নামের একজন টিকিট প্রত্যাশী ক্ষোভ প্রকাশ করে রেলওয়ের পেজে লিখেছেন, ‘সকাল আটটা থেকে চেষ্টা করছি। কিন্তু টিকিট কাটতে পারছি না। এসব হয়রানির মানে হয়? সময়ের মূল্য নাই? কোন জবাবদিহিতা নাই?’
মো. ইমানুল হাসান নামের আরেক যাত্রী বলেছেন, ‘আটটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে টিকেট কাটতে চেষ্টা শুরু করি। কিন্তু শুধু লোডিং দেখায়। ২৬ মিনিট চেষ্টার পর যখন পারচেজ অপশন পর্যন্ত গেলাম ততক্ষণে সব টিকিট বিক্রি শেষ!’
রেলের হয়ে টিকিট বিক্রি করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস)। রেল সেবা অ্যাপ ও ওয়েবসাইটটি পরিচালনা করে এই প্রতিষ্ঠানটি। অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের সমস্যা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সিএনএসের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রতি ঈদেই ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বাড়ে। এ সময়ে একসঙ্গে হাজারো যাত্রী টিকিটের খোঁজ করেন। প্রতিবারই সিএনএসের পরিচালিত অ্যাপ ও ওয়েবে প্রবেশ করা যায় না। যদিও প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তারা মিনিটে ১৫ হাজার টিকিট বিক্রিতে সক্ষম। কিন্তু এ সক্ষমতার প্রমাণ ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রিতে দেখা যায়নি।
করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউনে গত ২২ জুন থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন চলবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলতে পারবে ট্রেন। আজ সকাল থেকে ৩৮টি আন্তঃনগর ট্রেনে ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ট্রেনের সব টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। কাউন্টার থেকে কোনো টিকিট দেওয়া হচ্ছে না।