কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই বরিশাল থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার (১৮ আগস্ট) মধ্য রাতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে লক্ষ্য করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবনের সামনে আনসারদের গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে বাস বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকালে বরিশাল থেকে কোনো রুটে বাস ছেড়ে যায়নি।
বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস জানান, মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে লক্ষ্য করে আনসারদের গুলি বর্ষণের বিচার চেয়ে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আমার ড্রাইভার ও কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবু হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা এর বিচার চাই।
তবে বরিশাল নৌযান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মাস্টার আবুল হাশেম বলেন, সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল করছে। ঢাকা থেকেও লঞ্চ এসেছে। এখন পর্যন্ত (সকাল ৯টা) লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই।
অন্যদিকে মালিক সমিতির কেউ মোবাইল রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করে। এ সময় ইউএনওর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদের পরিচয় জানতে চান। এরপর তারা সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বাগবিতণ্ডা হয়।
খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী সেখানে যান। পরে সেখানে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়েন আনসার সদস্যরা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুনিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তারা আমাকে গালিগালাজ করে। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়।
মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ছররা গুলি করা হয়েছিল। আমার গায়ে লেগেছিল, ব্যথা পেয়েছি। আমার গায়ে জ্যাকেট ছিল। সেসময় সঙ্গের লোকেরা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছেন। তাদের গুলি লেগেছে। অনেকেই আহত হয়ে থাকতে পারেন। তবে কতজন, জানি না।
মেয়র বলেন, সেসময় আমি মাথা ঠান্ডা রেখেছি। মন বিষণ্ণ হওয়ায় বাসায় চলে এসেছি। এ সুযোগে শহরে খবর ছড়িয়েছে যে আমি গুলিবিদ্ধ হয়েছি।