প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর গুুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ককে গুরুত্ব দেই। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।’
বাংলাদেশে শ্রীলংকার নবনিযুক্ত হাইকমিশনার জেনারেল এডব্লিউজেসি ডি সিলভা আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
এ অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচনে প্রতিবেশী দেশগুলোর সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের সকলকে সার্বিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য একযোগে কাজ করা উচিত।
তাঁর সরকারের সময়ে দেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির প্রসংগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুকে দেশের জন্য একটি বিরাট সমস্যা আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা তা করছে না।’
প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থেই বাংলাদেশে শ্রীলংকার বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে আরো শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের জন্য দেশব্যাপী একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি এবং এখানকার ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিয়ে শ্রীলংকার উদ্যোক্তারা এখানে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারেন।’
বাংলাদেশ ৯০টিরও বেশি দেশে ওষুধ জাতীয় পণ্য রপ্তানী করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শ্রীলংকাতেও আলু এবং পাট রপ্তানী করছি।’
প্রসঙ্গক্রমে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ব্যাপকসংখ্যক শ্রীলংকান, নেপালী এবং ভুটানের শিক্ষার্থী বাংলাদেশের মেডিকেলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আরো বেশিসংখ্যক শ্রীলংকার শিক্ষার্থীদের আমাদের মেডিকেল কলেজগুলোতে অধ্যয়নের জন্য স্বাগত জানাচ্ছি।’
বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমৎকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়শী প্রশংসা করে বৈঠকে শ্রীলংকার হাইকমিশনার বলেন, ‘দেশের প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়ন অনন্য।’
ডি সিলভা শ্রীলংকার মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কাছে বাংলাদেশ পছন্দনীয় গন্তব্যস্থল উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে প্রায় ২২৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে বিশেষ করে তৈরী পোশাক শিল্পে অনেক শ্রীলংকার নাগরিকও বর্তমানে কর্মরত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও শ্রীলংকার হাইকমিশনার তার দেশের গভীর আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।
প্রতিউত্তরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও সহযোগিতার বিষয়ে তাকে আশ্বস্থ করেন।
প্রতিবেশী এ দুটি দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে হাইকমিশনার বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বৈঠকের শুরুতেই শ্রীলংকার হাইকমিশনার সে দেশের রাষ্ট্রপতি মাইথ্রিপালা শ্রীসেনার শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ