পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসনেত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, আমি সর্ব ধর্মে বিশ্বাস করি, যতদিন বাঁচবো ততদিন এটা মেনে চলবো। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভবানীপুর কেন্দ্রের চক্রবেড়িয়া উত্তর পদ্মপুকুরে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
ভবানীপুর কেন্দ্রকে তিনি বলেন, এটা একটা মিনি ইন্ডিয়া। একটা ছোটোখাটো ভারতবর্ষ। সব জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষ এখানে বসবাস করেন। ভবানীপুর থেকেই ভারতবর্ষ শুরু হয়। ভি তে ভবানীপুর, ভি তে ভারতবর্ষ।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে মমতা বলেন, ছয়বার এখানে দাঁড়িয়েছিলাম লোকসভায়। আমাকে ছয়বারই আপনারা জিতিয়েছেন। ২০১১ তে বাই ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিলাম। তখনো আপনারা আমাকে জিতিয়েছিলেন। মনে রাখবেন, ছয় মাসের মধ্যে আমি যদি জিতে আসতে না পারি তাহলে আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবো না। তাই এখানে প্রার্থী হয়েছি।
তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, আমি বার বার বলছি, কৃষকবিরোধী তিনটে কৃষি বিল ফেরত নিন। আমি কৃষকদের আন্দোলনের পাশে আছি। যতদিন বাঁচবো ততদিন ভালো কাজ করেই যাবো। বাজে কাজ করলে ব্রেন নষ্ট হয়ে যাবে।
মমতা ব্যানার্জি বলেন, আমাকে বিজেপি চ্যালেঞ্জ করে বলে, আমি দুর্গাপূজা, লক্ষ্মীপূজা করতে দিই না। আপনাদের এখানে ভোট চাইতে আসলে বিজেপির কাছে আগে জানতে চান, ওরা ১৪৪ ধারা জারি করে দিয়েছে। কী করে দুর্গাপূজা হবে! লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজা, দিওয়ালি হবে? আমি সর্ব ধর্মে বিশ্বাস করি। আমি যতদিন বাঁচবো ততদিন এটা মেনে চলবো।
তিনি বলেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। চার মাস ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে জল বেশি না জমে। জল জমলেও আমরা তাড়াতাড়ি সেটা ক্লিয়ার করে দিচ্ছি। আগামী সপ্তাহেও প্রচুর বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ভোটের দিনও বৃষ্টি হতে পারে। আপনারা দয়া করে বৃষ্টি হলেও ভোটটা দেবেন। আপনারা ভোট না দিলে আমি হয়তো মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবো না। তবে জেনে রাখবেন, আমার দলে অনেকেই আছেন যিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন।
এই তৃণমূল কংগ্রেসনেত্রী বলেন, কলকাতায় কোভিড কন্ট্রোলে। ভবানীপুরে ৯৯/১০০ শতাংশ টিকাকরণ হয়ে গেছে। কলকাতায় ৮৮ শতাংশ হয়েছে। সারারাজ্যে সাড়ে পাঁচ কোটি টিকা আমরা দিয়েছি। আরও ছয়/সাত কোটি টিকা আমরা চেয়েছি কেন্দ্রের কাছে।
মমতা বলেন, গুজরাটে কোভিডে কতজন মারা গিয়েছে, কোনো সংখ্যা নেই। ওখানে তো মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত বদল করে দিলো। উত্তর প্রদেশে কতজন মারা গিয়েছেন? সংখ্যা লুকানোর জন্য কোভিডে মৃতদের দেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছে। সেই দেহ আমাদের রাজ্যের মালদহে এসে পৌঁছালে আমরা তার অন্তিম সৎকার করেছি।
তিনি আরও বলেন, একদিন একটা ভোট দিন আর পাঁচ বছরের জন্য নিশ্চিন্তে থাকুন। পূজা কমিটিগুলোকে বলবো, আপনারা যা যা পেতেন তা সব বলবৎ থাকবে। আমি একা নই। আমি আপনাদের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। আমি গুরুদুয়ারা, লক্ষ্ণী মন্দির, শীতলা মন্দির, গণপতি বাপ্পা, মসজিদ সব জায়গায় গিয়েছি। বাংলাই জাগরণের মূলমন্ত্র।