কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটক করেছে ভারতের পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খিরিতে চার কৃষককে ‘হত্যা’র প্রতিবাদে লখিমপুরে যাচ্ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ অন্য নেতারা। তবে খিরিতে যাওয়ার আগেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ গৃহবন্দি করে রেখেছিল উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদককে। সেই আদেশ অমান্য করে রোববার রাতে লখনউ থেকে লখিমপুর খিরির উদ্দেশে রওনা হন প্রিয়াঙ্কাসহ কংগ্রেস নেতারা।
কংগ্রেসের দাবি, যাত্রাপথে হরগাঁও থেকে আটক করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। পুলিশ প্রিয়াঙ্কার গাড়ি আটকানোর পর পায়ে হেঁটেই লখিমপুরের দিকে রওনা হন প্রিয়াঙ্কা। দফায় দফায় লখিমপুর যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয়। আটকে দেওয়া হয় কনভয়। অন্যদিকে, পুলিশের দাবি লখনউ থেকে আটক করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকে।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্কের পর সোমবার (৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টায় তাকে হরগাঁও থানা এলাকায় আটক করে পুলিশ। পরে প্রিয়াঙ্কাকে সীতাপুর জেলার একটি গেস্ট হাউসে নেওয়া হয়েছে। ইউপি কংগ্রেস টুইট করে এ ঘটনার কথা জানিয়েছে।
লখিমপুর খিরি যাওয়ার পথে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রোববারের ঘটনার কথা বর্ণনা করে বলেন, এ দেশে কৃষকদের যেভাবে পদদলিত করা হচ্ছে, তাতে আমার কোনো নিন্দার ভাষা নেই। কয়েক মাস ধরে কৃষকরা তাদের আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছে, কিন্তু সরকার শুনতে প্রস্তুত নয়। আজকের ঘটনা দেখাল যে এ সরকার কৃষকদের পিষে ফেলার রাজনীতি করছে। তবে এ দেশ কৃষকদের দেশ।
তাকে গৃহবন্দি করে রাখার ইউপি পুলিশের আদেশের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে কোনো অপরাধ করছি না। শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাই এবং তাদের দুঃখ ভাগ করতে চাই। আমি কি ভুল করছি? যদি কিছু ভুল করে থাকি, তাহলে আপনার (ইউপি পুলিশ) গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা উচিত। ইউপি পুলিশ আমাকে আটকে দিয়েছে, কিন্তু কোন কারণে?
প্রসঙ্গত, ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্যর সফরের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন এলাকার কৃষকরা। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়ি দুই কৃষককে পিষে দেয়। সেই গাড়িতে ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে। ওই খবর ছড়িয়ে পড়তেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। লখিমপুর খিরির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরুণ কুমার সিং জানিয়েছেন, ওই সংঘর্ষে চার কৃষক সহ মোট আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে অজয় মিশ্রের দাবি, তার ছেলে কনভয়ে ছিল না। থাকলে তাকেও পিটিয়ে মেরে ফেলত কৃষকরা।