মত ও পথ
এমনিতেই ফুটবল জ্বরে কাঁপছেন বাংলাদেশিরা৷ ব্রাজিল ও আর্জেন্তিনার সমর্থকদের রকম সকম নজর কাড়ছে দুনিয়ার৷ কারোর বাড়ির রঙ করা হয়েছে ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জাতীয় পতাকায়৷ রাস্তায় চলেছে পতাকা মিছিল৷ সবমিলে হলুদ-সবুজ রঙে মুড়ে গিয়েছে সর্বত্র৷ এসব দেখেই অভিনব উপহার বার্তা-বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেবে ব্রাজিল। কিছু বাছাই করা কোচ রয়েছেন এই তালিকায়৷
আরও জানা গিয়েছে বিশ্বকাপের পরই দুই কিংবদন্তি ফুটবলার জিকো ও রোনাল্ডিনহোকে বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ ঢাকার ব্রাজিলিয়ান দূতাবাস এই উদ্যোগ নিয়েছে। ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভেরা বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একথা জানান।
বাংলাদেশের ফুটবল অনুরাগীদের একটা বড় অংশ মনে-প্রাণে ব্রাজিল সমর্থক। সে খবর চাউর হয়ে গিয়েছে ব্রাজিলেও। ব্রাজিলের বিশ্বখ্যাত টিভি চ্যানেল ‘ও গ্লোবো টিভি’ ব্রাজিলের ফুটবল দলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অকুণ্ঠ ভালবাসা দেখে বিস্মিত, মুগ্ধ। বাংলাদেশের মানুষের ব্রাজিল ফুটবল দলের প্রতি অনুরাগ ও ভালবাসার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে গ্লোবো টিভির একটি প্রতিনিধি দল পাঁচদিন ধরে বাংলাদেশে খবর সম্প্রচার করছে। এই টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে আসছেন দুই বিশ্বকাপার৷
এদিকে মন্ত্রী বীরেন শিকদার জানান, যুব ও ক্রীড়া সচিব-সহ কর্মকর্তারা ব্রাজিল সফরকালে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে কথাবার্তা হয়। রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। চিনে স্যোশাল প্রোগ্রামের আওতায় ব্রাজিল স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করে ফুটবল প্রশিক্ষণ দেয়৷ একইভাবে বাংলাদেশেও যাতে ফুটবল শিবির করা যায় তার জন্য ব্রাজিলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বাংলাদেশের ফুটবল যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য কোচ দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে, কোচদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করতে ব্রাজিল রাজি হয়েছে।
বাংলাদেশে একসময় ফুটবল প্রবল জনপ্রিয় ছিল৷ ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব (আবাহনী ক্রীড়াচক্র, ঢাকা মোহামেডান) বিভিন্ন সময়ে সুনামের সঙ্গে খেলেছে ভারতে৷ ১৯৭৩ সালে জাতীয় ফুটবলের দলের আত্মপ্রকাশ৷ সেই বছরেই থাইল্যান্ডের সঙ্গে খেলে ২-২ গোলে সমতা বজায় ছিল৷ ১৯৮০ সালে এশিয়ান গেমসে অংশ নেয় বাংলাদেশ ফুটবল দল৷ ১৯৮৫ সালে মলদ্বীপের বিরুদ্ধে সর্বাধিক ৯-০ গোলে জয় ছিল মাইলস্টোন৷ আবার ১৯৭৯ ও ১৯৮২ সালে ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে পরপর ৯টি করে গোল খেয়ে পরাজয়ের গ্লানিও রয়েছে৷
তবে ফুটবল জনপ্রিয়তা হারায় ক্রিকেটের দ্রুত উত্থানে৷ যে কোনও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের কাছে কঠিন বাঁধা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল৷ ফলে ফুটবলের জনপ্রিয়তা গিয়ে ঠেকেছে বিশ্বকাপের আসরে প্রিয় দল ও ইউরোপের ঘরোয়া লিগের ম্যাচে পছন্দের ক্লাব ও খেলোয়াড়কে ঘিরে৷