এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে টুইটে হামলা কিন্তু থামায়নি গেরুয়া সমর্থকেরা। আর নিজের লড়াই এখনও নিজেই লড়ে যাচ্ছেন সুষমা। পাশে শুধু তাঁর স্বামী স্বরাজ কৌশল।
সুষমার পাশাপাশি তাঁর স্বামীকেও কদর্য ভাষায় টুইট করা হয় গতকাল। মুকেশ গুপ্ত নামে এক ব্যক্তি স্বরাজ কৌশলকে টুইটে লেখেন, ‘‘আজ রাতে আপনার স্ত্রী (সুষমা স্বরাজ) বাড়িতে এলে কেন তাঁকে পিটিয়ে শিক্ষা দিচ্ছেন না মুসলিম তোষণ না-করতে? তাঁকে বলুন, বিজেপি কখনও মুসলিম ভোট পাবে না!’’ স্বরাজ কৌশল আজ তাঁর জবাব দিয়ে বলেন, ‘‘আপনার কথায় আমরা অসহ্য যন্ত্রণা পেয়েছি। আমার মা ১৯৯৩ সালে ক্যান্সারে মারা যান। সাংসদ ও মন্ত্রী সুষমা এক বছর হাসপাতালে থেকে মায়ের সেবা করেছেন। আমার বাবার ইচ্ছায় তাঁর চিতায় আগুনও দিয়েছেন। দয়া করে তাঁর সম্পর্কে এমন শব্দ প্রয়োগ করবেন না। তাঁর জীবনের থেকে বড় কিছু নেই। আপনার স্ত্রীর প্রতি আমার শ্রদ্ধা রইল।’’
গোটা বিষয়টি সুষমা নিজের টুইটেও শেয়ার করেন। গত দু’সপ্তাহ ধরে যে ভাবে তাঁকে টুইটে গেরুয়া সমর্থকেরা হামলা করছে, তা নিয়ে কাল রাতেই সুষমা মানুষের মতামত চান। জানতে চান, তিনি সঠিক কাজ করছেন কি না? কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মোদী সরকারের এক প্রবীণ মহিলা মন্ত্রীকে এ ভাবে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে, আর মোদী-অমিত শাহ চুপ? অন্য কোনও বিজেপি নেতাও গত এক সপ্তাহে সুষমার সমর্থনে এগিয়ে আসেননি। বরং আজও মেহবুবা মুফতি, অরবিন্দ কেজরীবালের মতো বিরোধী শিবিরের নেতারা সুষমার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করেছেন।
লখনউ পাসপোর্ট অফিসে ধর্ম নিয়ে এক দম্পতিকে হেনস্থা করার অভিযোগ থেকে গোটা ঘটনার সূত্রপাত। সুষমাকে সেই দম্পতি টুইট করতেই তড়িঘড়ি তাঁদের পাসপোর্ট দেওয়া হয়। আর বদলি করা হয় পাসপোর্ট আধিকারিককে। বিজেপি-আরএসএস-এর একাংশ প্রকাশ্যেই অভিযোগ করে, মুসলিম তোষণের জন্য পাসপোর্ট আধিকারিককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
তাঁদের দাবি, নিয়ম ভেঙে পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে ফিরে সুষমা বলেন, তিনি কোনও নির্দেশই দেননি। বিষয়টি জানতেনও না। কিন্তু তাতেও সুষমার উপরে হামলা থামেনি। বিজেপি-আরএসএস-এর একাংশ রুষ্ট জেনে বিজেপি নেতৃত্বও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে এগিয়ে আসেননি।
আন্তর্জাতিক