দুর্বল বন্ড মার্কেট ব্যাংকিং খাতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে একথা বলা হয়েছে, চীন, অস্ট্রেলিয়া, হংকংসহ অনেক দেশ বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এর বিপরীত চিত্র। দুর্বল বন্ড মার্কেটের কারণে ব্যাংকগুলো ডিপোজিট ছাড়া অন্য কোন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারছে না। বন্ড ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে কর্পোরেট সেক্টর বন্ড মার্কেটের পরিবর্তে পুরোপুরি ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে দুর্বল বন্ড মার্কেটের কারণে ব্যাংকিং খাতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ডেভেলপমেন্ট অব বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজার এবং সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড.তৌফিক আহমদ চৌধূরী।
তিনি গোলটেবিল বৈঠকের বিষয়টির ওপর সূচনা বক্তব্য দেন। তিনি অধিকতর দক্ষতর সঙ্গে বন্ড মার্কেট উন্ন্য়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধূরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বন্ড মার্কেটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এটা এখন অত্যন্ত জরুরি।কারণ বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী এবং কর্তৃপক্ষ উভয়ই লাভবান হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বন্ড মার্কেট এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।এটা প্রসার করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ ও এনবিআরসহ নীতিনির্ধারণী সংগঠনগুলোকে যৌথভাবে কাজ করা দরকার।বন্ড মার্কেটকে এগিয়ে নিতে যতœশীলতার সাথে কাজ করতে হবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের।এটিকে শক্তিশালী করতে হলে বর্তমান রেপো আইন পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে তিনি মনে করেন।
বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা,উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী বলেন, বাংলাদেশে বন্ড মার্কেটে নতুন অনেক সিকিউরিটিজ আনতে হবে। এতে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাবে। এজন্য তিনি জিরো কুপোন বন্ড, ফিক্সড কুপোন বন্ড, সুকুক বন্ডের মতো পণ্য আনা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন।
বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ভিশন ২০৪১ অর্জন করতে হলে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের প্রয়োজন।অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশের বন্ড মার্কেট এর বিস্তৃতি অনেক কম।এ অবস্থার পরিবর্তনে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, এক সময় বন্ড মার্কেট নিয়ে কোনো আলোচনাই ছিল না। কিন্তু এখন আলোচনা হচ্ছে, এটাই আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক।
সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড.তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন,বন্ড মার্কেট,ব্যাংক ব্যবস্থা এবং শেয়ার বাজারের মধ্যে সমন্বয় করলে তারল্য সংকট থাকবে না।

শেয়ার করুন

universel cardiac hospital

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে