রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের প্রতি রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদেরকে দক্ষ, চৌকস ও যুগোপযোগী নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ রাতে নগরীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এসএসএফ’র ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণকালে বলেন, ‘পেশাদারিত্ব অর্জনে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক এসএসএফ সদস্যকে নিজেকে দক্ষ, চৌকস ও যুগোপযোগী নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
আবদুল হামিদ বলেন, নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা সকল সহযোগী এজেন্সির সঙ্গে সুসম্পর্ক, নিবিড় যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে ভিভিআইপিদের জনসংযোগের বিষয়ও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘ভিভিআইপিদের জনসংযোগের বিষয় বিবেচনায় রেখে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ আপনাদের দায়িত্ব পালনকালে অহেতুক হয়রানি অথবা ভোগান্তির শিকার না হয়।’
কর্তব্য পালনকালে এ বাহিনীর সদস্যরা আরো বেশি দক্ষতার পরিচয় দেবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আবদুল হামিদ নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল সহযোগী সংস্থার মধ্যে সুসমন্বয় বজায় রাখার ওপরও জোর দেন।
রাষ্ট্রপতি সুস্পষ্টভাবে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যদি পেশাদারিত্বের সঙ্গে ভিভিআইপিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে এবং সর্বসাধারণের সঙ্গে কোন দূরত্ব তৈরি না করে তবে এই কৃতিত্ব হবে জওয়ানদের।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এসএসএফ সদস্যদের নিরাপত্তা ও জনসংযোগ একই সঙ্গে এই দু’টি বিষয় মাথায় রাখার পরামর্শ দেন।
ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা বিধানে এসএসএফ’র অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের ১৫ জুলাই প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বাহিনী নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত ও সর্বোপরি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের কারণে এখানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আশা করছেন সুযোগ্য নেতৃত্ব, সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং এসএসএফ সদস্যদের পেশাদারিত্ব, দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এই সংস্থাটি একটি ‘আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনী’ হিসেবে গড়ে ওঠবে।
প্রেসিডেন্ট সিকিউরিটি ফোর্স (পিএসএফ) নামে ১৯৮৬ সালে এই বিশেষ নিরাপত্তা ইউনিটের জন্ম। পরবর্তীতে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ভিভিআইপি বিদেশী প্রতিনিধিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব অর্পণ করে এই বাহিনীর পুনঃনামকরণ করা হয় এসএসএফ।
ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা বিধানে এই এলিট ইউনিটের সদস্যদের আনা হয় সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে।
অনুষ্ঠানে এসএসএফ’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শফিকুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ, তিন বাহিনীর প্রধানগণসহ উচ্চ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
পরে নৈশভোজ শেষে রাষ্ট্রপতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতির আহবান
ডেস্ক রিপোর্ট