দুই সিটিতে নতুন নির্বাচন চায় বিএনপি, বিক্ষোভের ডাক

ডেস্ক রিপোর্ট

তিন মহানগরে সোমবার যে ভোট হয়েছে, তার প্রতিটিতেই ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। অর্থাৎ নিজেদের জয় নিশ্চিত হওয়া সিলেটেও কারচুপির অভিযোগ করেছে দলটি। সিলেটে কারচুপির পরও কীভাবে জিতল, তার ব্যাখ্যা দিয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কারচুপি না হলে সিলেটে লক্ষাধিক ভোটে বিএনপি জয়লাভ করত। তিনি বলেন, তিন সিটিতে ভোট কারচুপি নয়, ভোট ডাকাতি হয়েছে।

ভোটের পর মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় তিনি রাজশাহী ও বরিশালে পুনরায় ভোটের দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশের মহানগরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেন।

universel cardiac hospital

গত মে মাসে খুলনা, জুনে গাজীপুর এবং সোমবার রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট নিয়ে নানা অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। এজেন্টদের বের করে দেয়া, কেন্দ্র দখল করে সিল মারা, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে না দেয়া, গণগ্রেপ্তার, পুলিশের হয়রানি, সব অভিযোগই করেছে বিএনপি।

এর মধ্যেই সিলেটে ধানের শীষের প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর জয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিনি ১৩৪ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রে চার হাজার ২৬২ ভোটে এগিয়ে। কিন্তু স্থগিত হয়ে যাওয়া দুটি কেন্দ্রের ভোটের সংখ্যা চার হাজার ৭৬৭ ভোট হওয়ায়, সেখানে আবার ভোট না নিয়ে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা সম্ভব নয়। কিন্তু আবার ভোট হলে সেখানে শতভাগ ভোটারের উপস্থিতি এবং তাদের সবার ভোট নৌকা প্রতীকে পড়া কার্যত অসম্ভব মনে হওয়ায় সেখানে সিলেটে আরিফুলই আবার মেয়র হচ্ছেন, এটা নিশ্চিতই প্রায়।

ফখরুল বলেন, গতকাল সারা দিন তিন সিটিতে ভোট কিভাবে করেছে ক্ষমতাসীনরা তা আপনারা দেখেছেন। আমাদের প্রার্থীরা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। রাজশাহীতে বুলবুল ভোট পর্যন্ত দিতে পারে নাই, ভোট না তিনি এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্রে বসে প্রতিবাদ করেছে। রাজশাহী ও বরিশালের সিটি নির্বাচনে সীমাহীন কারচুপি হয়েছে। এজন্য আমরা এই দুই সিটির নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একইসঙ্গে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

সিলেট সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমাদের দলের মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক লক্ষাধিক ভোটে জয়লাভ করত। একইভাবে বরিশাল এবং রাজশাহীতে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমাদের দলের প্রার্থীরা লক্ষাধিক ভোটে জয়লাভ করতো।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়িয়েছে প্রশাসন। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। তারা জানে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এজন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করে আবারও ৫ জানুয়ারির মত একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে চায়।

আগামী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্দলীয় সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনও দাবি করেন বিএনপি নেতা। বলেন, এই সরকার ও অযোগ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেটা আবারও প্রমাণিত হলো।

সেই সঙ্গে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ভোটে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনের দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। বিএনপির গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি আর জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার না করার দাবি জানান বিএনপি নেতা।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে