যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সকালে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। সকাল সাড়ে সাতটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন ঢাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কবি ড. মুহম্মদ সামাদসহ বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা পর পর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সমাধি প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কবি স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ঢাবি উপ-উপাচার্য কবি ড. মুহম্মদ সামাদ এতে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, সংগীত বিভাকের শিক্ষক টুম্পা সমদ্দার,অধ্যাপক ড. মোহসিনা আখতার খানম (লীনা তাপসী), অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ও অধ্যাপক আখতার কামাল।
আলোচনায় জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম কবির প্রতি শ্রদ্ধা জািনয়ে বলেন, কবির সমাধির পরিস্কার পরিচ্ছনতা আরও বাড়ানো দরকার। তিনি সমাধি প্রাঙ্গণে আরও ফুলগাছ ও অন্যান্য গাছ রোপণের আহবান জানিয়ে বলেন, কবির বিভিন্ন কবিতায় অনেক গাছের ও ফুলের নাম রয়েছে। সেই সব ফুল ও গাছ লাগানোর জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, কবির সমাধিকে যেন স্মৃতি সৌধ করে ফেলা না হয়। এটা সমাধিই থাকবে। সমাধির পরিবেশ আরো আকর্ষনীয় করার জন্য তিনি ষড়ঋতুতে যে সব ফুল ফোটে, সে সব গাছ রোপন করার আহবান জানান।
ঢাবির উপ-উপাচার্য ড. মুহম্মদ সামাদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আগামী বছর নজরুল জন্মজয়ন্তীতে কবির সমাধিতে অনুষ্ঠান বড়সড় করে আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, নজরুল সারাবিশ্বের নির্যাতিত মানুষের কবি। মানবতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি। বিশ্বে এখন এই কবি মানবতার ও সৃষ্টিশীলতার কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, শিল্পী ইয়াকুব আলী খান, শিল্পী লীনা তাপসী ও ঢাবির সংগীত দলের শিল্পীরা। কাজী নজরুলে কবিতা আবৃত্তি করা হয়।
সমাধিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুস্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লাীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি, দিপু মণি এমপি প্রমুখ।
এ ছাড়াও সমাধিতে কবির পরিবারের সদস্য, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাবির উপ-উপাচার্য, ঢাবি শিক্ষক সমিতি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাসদ (মার্কসবাদী), বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, গণ গ্রন্থাগার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, রোকেয়া হল, মহিলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাবি একাত্তর হল, নজরুল ইন্সিিটটিউট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, কপি রাইট অধিদফতর, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, শহীদ সার্জেন্ট জহিরুল হক হল, ঢাবি অফিসার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল, কবি সুফিয়া কামাল হলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় কবির সমাধি।
কবির স্বরণে জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এতে আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী। পরে বিভিন্ন শিল্পীরা নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিটিভিসহ বেসরকারী টিভি থেকে কবির ওপর নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে।