ভারতে সমকামিতা বৈধতা পেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ব্রিটিশ-আমলে তৈরি করা আইনের একটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে সমকামিতা বৈধতা দিল ভারত। বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারক এক ঐতিহাসিক রায়ে সমকামিতাকে বৈধ ঘোষণা দেয় বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় পাঁচ সদস্যের বিশেষ বিচারক বেঞ্চের নেতৃত্ব দেন বিচারক দীপক মিশরা।

দীপক মিশরা জানান, আমাদেরকে সকল নাগরিকের ক্ষমতায়নের জন্য কুসংস্কারকে বিদায় জানাতে হবে। পাঁচ বিচারক সর্বসম্মতভাবে সমকামিতার পক্ষে রায় দেন।

universel cardiac hospital

এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, কেউ তাদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য থেকে পালাতে পারে না। সমাজ এখন ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য আরো উন্নত হয়েছে।

এর আগে ২০১৩ সালে সেকশন ৩৭৭ ধারার অধীনে সমকামিতা অবৈধ ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজকের এই রায়ে আগের ঘোষণা পাল্টে দিয়েছেন পাঁচ বিচারক। এতে করে অবসান ঘটলো সমকামিতা নিয়ে ব্রিটিশ-আমলে তৈরি করা আইনের।

সুপ্রিম কোর্ট আরো জানায়, ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রতি সম্মান হচ্ছে স্বাধীনতার সারমর্ম। সমকামি সম্প্রদায় সংবিধানের আওতায় সমান অধিকার প্রাপ্য।

প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ নম্বর ধারা অনুসারে, সমকামিতা অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য ছিল। ১৮৬১ সালে তৈরি এই আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজার আইন ছিল। এই আইনে সাজা হওয়ার ঘটনা বিরল তবে সমকামি অধিকার আদায়ের দাবিতে কাজ করা কর্মীরা জানিয়েছেন, সমকামিতা হওয়ার কারণে ভারতে অনেকে হয়রানির শিকার হন।

দীর্ঘদিন ধরেই ৩৭৭ নম্বর ধারাকে বাতিল করার দাবি তুলেছে সমকামি ও অধিকার কর্মীরা। চলতি বছর সমকামিতা বিরোধী এই আইনের বিরুদ্ধে পিটিশন করেন উচ্চ-পর্যায়ের পাঁচ ব্যক্তি। তারা জানান, তারা শাস্তির শিকার হওয়ার ভয়ে আছেন।

পিটিশনাররা যুক্তি দেখান যে, ৩৭৭ ধারা সংবিধানে সন্নিবেশিত অধিকার ও নীতির বিরোধিতা করে। যেমন, আইনে সমতা ও ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ, বংশ ও জন্মস্থানের ওপর ভিত্তি করে বৈষম্যতার শিকার হওয়া।

২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট এক রায়ে জানায় যে, সংবিধান কর্তৃক নিশ্চিত করা মৌলিক আইনের লঙ্ঘন করে। ৩৭৭ ধারা থেকে অপরাধ-কে নিমূর্ল করার পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু ২০১৩ সালে সুরেশকুমার কৌশল বনাম নাজ ফাউন্ডেশনের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে