সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকার পতনে ‘এক দফা’ আন্দোলনের তাগিদ দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ বৈঠক সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের বৈঠকে তিনটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে- বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, জোটবদ্ধ আন্দোলন এবং নির্বাচন। ম্যাডামের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আন্দোলন বেগবান করার জন্য সবাই একমত পোষণ করেছেন।’
কৌশলগত কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ধাপে ধাপে আন্দোলন কর্মসূচি বেগবান করে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে সবাই একমত হয়েছেন।’
বিএনপির বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে আশা প্রকাশ করে ঢালী বলেন, ‘সবাই আশাবাদী, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হবে।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য বলেন, ‘নির্বাচনে গেলে খালেদা জিয়াকে নিয়েই যেতে হবে, তাকে ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। আগে বেগম জিয়ার মুক্তি, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বৃহত্তর ঐক্য গঠনে জোর দেয়া হয়েছে বৈঠকে। এ জন্য ঘনঘন কর্মসূচি না দিয়ে সময় নিয়ে হলেও একত্রে সরকার পতনে এক দফা কর্মসূচির তাগিদ দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাড় দিয়ে হলেও ঐক্য গঠন করতে হবে, বেগম জিয়া যে ঐক্য গঠনের কথা বলেছেন তা রক্ষা করতে হবে।’ কী ধরনের ছাড় এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগে ঐক্য পরে ছাড়।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের ম্যাডামের মুক্তি, জাতীয় ঐক্য বিশেষ করে বিভিন্ন কর্মসূচি এটাকে কীভাবে বেগবান করা যায়, কী হতে পারে, কী করলে ভালো হয় সে ব্যাপারে সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।’
বৃহত্তর ঐক্য গঠনের যে ছাড়ের কথা বলা হচ্ছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঐক্যের ব্যাপারে ছাড়ের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত আসে, সংলাপ শুরু হলে বিভিন্ন মন্তব্য আসে জাতীয় ঐক্যের সবাইকে নিয়ে দেশের সবকিছু নিয়ে ইতিবাচক। এখানে শুধু রাজনীতি নয়, শাসন আছে, প্রশাসন আছে। যেহেতু সবাই জেগে উঠছে। যারা ঐক্য করবে তারা তো শুধু ম্যাডামের জন্য রাজনীতি করবে না। দেশে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।’
সুকোমল বড়ুয়া বলেন, ‘দলকে বিকিয়ে তো কিছু করা যাবে না, তবে এ ব্যাপারে মহাসচিব খুব ভালো স্ট্রংলি বলেছেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঐক্যটা যাতে হয়, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চেষ্টা, করা, আন্দোলন এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
কী ধরনের কর্মসূচি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ বৃহত্তর ঐক্য গঠনে যে ছাড়ের কথা বলা হচ্ছে তানিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেন জানান তিনি।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুল হাই সিকদার, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, খোন্দকার গোলাম আকবর, মনিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরি এস ইসলাম, ভিপি জয়নাল, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, কর্নেল (অব.) আব্দুল লতিফ গাজী, মাজহারুল আনোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।