রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনি দালানে আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলা মামলার বিচার গত তিন বছরেও শেষ হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষের জানা নেই মামলাটির বিচার শেষ হতে আরও কতদিন লাগবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী দাবি করছেন, রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে ঠিকভাবে সাক্ষী হাজির করছে না। সাক্ষী হাজির না করায় মামলাটির বিচারকার্য বিলম্বিত হচ্ছে।
জানা গেছে, মামলাটি বর্তমানে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। ৪৬ সাক্ষীর মধ্যে প্রায় দেড় বছরে বাদীসহ ৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১১ অক্টোবর মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মামলার বাদীসহ ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের সমন জারি করার পরও অধিকাংশ সাক্ষী আদালতে হাজির হচ্ছেন না। সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার বিষয়ে পুলিশকে আরও আন্তরিক হতে হবে। মামলাটির বিচার কাজ শেষ হতে আরও কত দিন সময় লাগবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে রাষ্ট্রপক্ষ বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। প্রায় প্রতি ধার্য তারিখে আদালতে সাক্ষীরা উপস্থিত হচ্ছেন না। সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার দায়িত্ব রাষ্ট্রপক্ষের। অভিযোগ গঠনের প্রায় দেড় বছরে ৪৬ সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে সাক্ষীদের হাজির করলে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা হোসেনি দালানে বোমা হামলা চালায়। এতে দু’জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করেন।
২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক শফিউদ্দিন শেখ জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১০ জঙ্গির নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এছাড়াও অভিযানের সময় তিন জঙ্গি ক্রসফায়ারে মারা যায়।
২০১৭ সালের ৩১ মে ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে চার্জগঠন (বিচার শুরুর আদেশ) করেন আদালত।
আসামিরা হলেন- জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মোসায়েব, আরমান, রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব, কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক, মাসুদ রানা, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ, আবু সাঈদ সোলায়মান ওরফে সালমান, শাহ জালাল, ওমর ফারুক ওরফে মানিক ও চাঁন মিয়া।
আসামি ওমর ফারুক ওরফে মানিক, শাহ জালাল, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ ও চাঁন মিয়া জামিনে রয়েছেন। বাকি ছয় আসামি কারাগারে রয়েছেন। আসামিদের মধ্যে জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মোসায়েব, আরমান ও কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।