ড. কামাল হোসেনের ‘জাতীয় ঐক্যে’র স্টিয়ারিং কমিটি গঠন

বিশেষ প্রতিনিধি

একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনে স্টিয়ারিং কমিটি গঠন হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার জন্য আলোচনা করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে। গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনের ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ এবং দুই দলের বাইরে তৃতীয় শক্তি হওয়ার ঘোষণা দেয়া যুক্তফ্রন্ট এই কমিটি গঠন করেছে।

সোমবার সন্ধ্যায় ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে শীর্ষনেতাদের যৌথসভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা হলেন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব আবদুল মান্নান, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্যসচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন এবং নাগরিক ঐক্যের জাহিদুল ইসলাম।

এই কমিটি যৌথভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়নসহ সাংগঠনিক বিষয়াদি দেখভাল করবে।

বৈঠকে বিএনপির সঙ্গে কিছু ‘মৌলিক’ বিষয়ে ঐক্যের উদ্যোক্তাদের বোঝাপড়া চূড়ান্ত করা এবং আগামী দিনের কর্মসূচিতে তাদের কীভাবে যুক্ত করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, এ ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে আবার বৈঠকে বসার। এজন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চাইছেন গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন। তিনি অবশ্য বরাবর এই ধরনের আহ্বান জানান। তবে এই আলোচনা এবার গুরুত্ব পেয়েছে বিএনপির কারণে।

বিএনপি তার ২০ দলের বাইরে সরকাবিরোধী ঐক্য জোরাল করতে চায়। আর এই চেষ্টার অংশ হিসেবে গণফোরাম ও যু্ক্তফ্রন্টের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী তারা। আর এই মোর্চাকে জাতীয় ঐক্য বলছে তারা।

গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে বিএনপির যোগদান এই ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ এর আগেই গণফোরাম ও যুক্তফ্রন্ট একসঙ্গে কাজ করবে বলে ঘোষণা এসেছে।

এর মধ্যে স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের বৈঠকে বিএনপি ছাড়াও কিছু বাম-প্রগতিশীল ঘরানার দলকে যুক্ত করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

বিষয়টি নিয়ে ঐক্য গড়ে তোলার মধ্যস্ততাকারী জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহত্তর ঐক্যের আগামী দিনের কর্মপন্থা ঠিক করার জন্য আজ ডা. কামাল হোসেনের চেম্বারে সকলেই বসেছিলাম। যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া যৌথভাবে ইতিমধ্যে পাঁচ দফা দাবি এবং নয় দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। বিএনপির পক্ষ থেকেও বেশকিছু দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। বেশিরভাগ ইস্যুতেই তিন পক্ষ একমত।

তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট আর ঐক্যপ্রক্রিয়ার কর্মপন্থা ঠিক করতে আজ একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠিত হয়েছে। দাবি দাওয়ার বিষয়ে বেশির ভাগ ইস্যুতে তিন পক্ষ একমত। তারপরও আরও আলোচনা হবে। তিন পক্ষের মধ্যে সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হলে একটি অভিন্ন দাবিদাওয়া দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করা হবে।

তবে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি। প্রথমত যুক্তফ্রন্ট তিনশ আসনের মধ্যে ১৫০টিতে ছাড় ছাড়াও দুই বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রিত্ব চেয়েছে। আবার এই ঐক্য হলে নেতা কে হবেন, সেটিও বড় প্রশ্ন হয়ে রয়েছে। যদিও একটি প্রভাবশালী দৈনিক দাবি করেছে, ড. কামাল হোসেনকে বিএনপি নেতা হিসেবে মানতে প্রস্তুত।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে