ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের আদালতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের রায়ের দিন পিছিয়ে ১৫ নভেম্বর ধার্য করা হয়েছে।
শুক্রবার শিলংয়ের জেলা সেশন জজ আদালতের বিচারিক হাকিম ডিজি খার সিংয়ের আদালতে এ মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার কথা ছিল।
এদিন সকালে রায় শুনতে জামিনে মুক্ত থাকা বিএনপি নেতা আদালতে হাজির হন। দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তার।
সালাউদ্দিনের অন্তর্ধান রহস্য অবশ্য এখনও জানা যায়নি। ২০১৫ সালে বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন চলাকালে নিখোঁজ হন তিনি। পরে তাকে ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়া যায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের শিলংয়ে।
সেখানে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন বিএনপি নেতা। পরে থানায় নেয়া হলে নিজের পরিচয় দেন সালাউদ্দিন। বিএনপি নেতার দাবি, তিনি কীভাবে শিলং গেছেন, সেটি জানেন না।
২০১৫ সালের ১১ মে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করে মেঘালয়ের শিলং পুলিশ। ১৯৪৬ সালের ১৪ ধারা অনুযায়ী, অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে করা মামলায় ২০১৫ সালের ২২ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেয় শিলং পুলিশ।
এতে বলা হয়, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের শিলংয়ে আকস্মিক উপস্থিতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার এড়াতে তিনি ভারতে এসেছেন।
গত ২৫ জুন উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ১৩ আগস্ট রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। কিন্তু পরে তা পিছিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বের দিন ধার্য করা হয়।
এ মামলায় আদালত সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য রেকর্ড করেন। এ ছাড়া তাকে শিলংয়ে পাওয়ার পর যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়, সেই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
সরকারি কৌঁসুলি আইসি ঝাঁ জানান, সালাহউদ্দিন আহমেদ অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন। এ বিষয়ে সব তথ্যপ্রমাণ আদালতের কাছে হাজির করা হয়েছে।
অন্যদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এসপি মোহন্ত বলেন, তিনি কীভাবে ভারতে এসেছেন তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাকে কে বা কারা বাংলাদেশ থেকে তুলে নিয়েছিল, এমন খবর বাংলাদেশের সংবাদপত্রে রয়েছে। তাই তিনি মনে করেন, এ মামলায় সালাহউদ্দিন আহমেদ খালাস পাবেন।
প্রায় সাড়ে তিন বছর বিচার চলার পর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। এর আগে চারবার আলোচিত এ মামলার রায় পেছানো হয়।
এ ধরনের মামলার কার্যক্রম শেষ হতে এত সময় লাগার বিষয়টি ‘বিরল’উল্লেখ করে সালাহউদ্দিনের আইনজীবী এ পি মহন্ত বলেন, আদালতে সবকিছুই তুলে ধরা হয়েছে।
১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। এরপর প্রশাসনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত হন। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিএনপি সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হন।