লিবারেল ডোমেক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ হঠাৎ করেই সরব হয়ে ওঠেছেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সমালোচনায়।
স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্যে যাবে না- বিকল্পধারার এমন কঠোর অবস্থানের জবাবে অলি বলেন, বি. চৌধুরী যখন বিএনপির মহাসিচব ছিলেন তখন মসুলিম লীগের শাহ আজিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। জয়পুরহাটের আব্দুল আলীম (যিনি সাজাপ্রাপ্ত) ছিলেন রেলমন্ত্রী। এ ধরনের আরও অনেকেই বিএনপিতে ছিল। বি. চৌধুরী যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন তখন মুজাহিদ এবং নিজামী মন্ত্রীসভার সদস্য ছিল। তাহলে সময়ের প্রেক্ষিতে বক্তব্যের পার্থক্য হচ্ছে কেন? মাংস হালাল আর ঝোল হারাম এটা কেন? মহাসচিব থাকা অবস্থায় সব রাজাকাররা ভালো ছিল আর এখন তারাই রাজাকার, দেশদ্রোহী!
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এলডিপির দলীয় কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অলি আহমদ বলেন, সেজন্য বলি জনগণের কাছে যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে, দোকানদের কাছে যারা পরাজিত, তাদেরকে মাহাথির মোহাম্মদ বানান কেন? ৯০ বছরের বুড়োকে ৮০ বছর বানানো যাবে কিন্তু ৫০ বছর বানানো যাবে না। মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার জন্মদাতা, আধুনিক মালয়েশিয়ার নির্মাতা। যার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ নেই। আর আমরা তো ছেলের কাছে বিক্রি হয়ে যাই। যারা আজকে ঐক্যজোটে আছে তাদের অনেকের ছেলে ভিওআইপি ব্যবসা করে। ভিওআইপি ব্যবসা কার থেকে নিয়েছে, আওয়ামী লীগের থেকে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে? আর এদিকে বলছে ঐক্য করতেছি। রুমের ভেতরে থাকলে একরকম আর বাইরে অন্যরকম।
অলি আহমদ আরও বলেন, বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। তারা যদি এ স্বল্প সময়ের মধ্যে সংস্কার করে পুনর্গঠন করে এখনও তাদের পক্ষে যে কোনো কাজ করা সম্ভব। নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে এখনও ২০ দলের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে এখন কোনো কথা নেই। এখন কথা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।
তিনি বলেন, সরকার পদক্ষেপ না নিলে রক্তপাত এড়ানো সম্ভব হবে না। কারণ আগামী মাস থেকে বিরোধী দল এবং সরকারের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হবে। এটা যদি এড়াতে হয়, সরকার এবং বিরোধী দলগুলোকে নমনীয় হতে হবে। আলোচনায় বসতে হবে। নিজ নিজ জায়গায় অহংকার নিয়ে বসে থাকলে দেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, জোটে আমাদের অবস্থান বিএনপি স্পষ্ট করতে পারেনি। এটা স্পষ্ট করা উচিত। ড. কামাল হোসেনের পক্ষ থেকে আমার কাছে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এসেছিলেন। বলেছেন, আপনি যদি আসেন এ মুভমেন্টের গতির সঞ্চারিত হবে। উত্তরে বলেছি, আমি দুর্নীতিবাজ নই। আমি পরিষ্কার কথা বলি, আমি গেলে গতি সঞ্চারিত হবে তা জানি। তবে আমি ওখানে কাউকে নেতা বানানোর জন্য যাবো না। আমি যাব দেশের গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে। সেটাতে যদি আসেন তাহলে কথা বলেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিমসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।