হত্যার মুহূর্ত রেকর্ড হয়েছিল খাসোগির ঘড়িতে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

তুরস্কের একটি পত্রিকা নিখোঁজ সৌদি সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যার মুহূর্ত তার অ্যাপল ব্র্যান্ডের ঘড়িতে রেকর্ড করা হয়েছিল বলে শনিবার জানিয়েছে।

জানা যায়, ২ অক্টোবর খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের আগে তার অ্যাপল ওয়াচটির রেকর্ড অপশন চালু করেন।

universel cardiac hospital

তুরস্কের ডেইলি সাবাহ জানায়, খাসোগিকে জিজ্ঞাসাবাদ, নির্যাতন ও হত্যার মুহূর্তের অডিও রেকর্ডিং তার ঘড়ির মাধ্যমে তার ফোন ও আই-ক্লাউডে পাঠানো হয়েছে।

খাসোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের আগে তার ফোনটি তার বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিসের কাছে রেখে যান। তিনি ফিরে না এলে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করার নির্দেশনাও হাতিসকে দিয়ে যান খাসোগি। হাতিস ওইদিন মধ্যরাত পর্যন্ত কনস্যুলেটের বাইরে খাসোগির জন্য অপেক্ষা করার পর তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেন।

সাবাহ জানায়, কথিত হত্যাকারীদের সঙ্গে খাসোগির কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছে। হাতিসের কাছে রেখে যাওয়া ফোনে এই ফাইল পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

অ্যাপলের ঘড়িটি খেয়াল করার পর হত্যাকারীরা খাসোগির হাত থেকে সেটি আনলক করার জন্য একাধিক পাসওয়ার্ড প্রয়োগ করেন। শেষ পর্যন্ত তারা খাসোগির ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে সেটি খুলতে সক্ষম হয়।

সাবাহ জানায়, হত্যাকারীরা মাত্র কয়েকটি ফাইল ডিলিট করতে সক্ষম হয়েছে।

তবে অ্যাপলের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে অ্যাপল ওয়াচ খোলার কোনো ব্যবস্থা নেই। অ্যাপলের একজন কর্মকর্তাও মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন, অ্যাপল ওয়াচ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে খোলা সম্ভব নয়।

অ্যাপল ওয়াচ থেকে ফোনে অডিও পাঠানো সম্ভব নাকি তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সৌদি ও তুর্কি কর্মকর্তারা সাবাহ’র এই প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো মন্তব্য দেয়নি।

সৌদি আরব খাসোগিকে হত্যার কথা অস্বীকার করে বলেছে তিনি ওইদিন বিকেলে কনস্যুলেট ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু খাসোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের করছেন এই ভিডিওতে দেখা গেলেও, তিনি কনস্যুলেট থেকে বাইরে আসার ভিডিও বা অন্য কোনো প্রমাণ নেই।

সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বলেন, সৌদি সরকার খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে এই খবর মিথ্যা এবং রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ।

উল্লেখ্য, শুক্রবার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন সিএনএনকে জানায়, খাসোগিকে সৌদি কনস্যুলেটের ভিতর হত্যার অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং তাদের হাতে রয়েছে।

খাসোগি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ রাজপরিবারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতেন। এক পর্যায়ে তার কলাম নিষিদ্ধ করে তাকে সতর্ক দেয়া হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান এবং সেখানকার পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের একজন কলামিস্ট।

এর আগে বৃহস্পতিবার খাসোগির পরিচিত একজন মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে জানান, সৌদি সরকার বেশ কিছুদিন ধরেই খাসোগিকে প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে