‘জামায়াত সদস্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন’

ডেস্ক রিপোর্ট

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আজ মঙ্গলবার জামায়াত নেতাদেরকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার দাবি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, নিবন্ধন হারালেও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বা জোটগতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখার কোনো আইন নেই। আদালতের রায় অনুযায়ী দলটির সদস্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী বা জোটগতভাবে নির্বাচন করতে পারবেন। তবে তারা জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন না।

প্রতিনিধি দলের প্রধান নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, আমরা জামায়াতের অনুসারী বা নেতাকর্মী কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরাধীকারী যেন নির্বাচনে কোনোভাবে নির্বাচন করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছি।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে তরীকত ফেডারেশনের একটি রিট আবেদনের পর ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এরপর থেকে দলটির কোনো নেতা দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না।

তবে বেশ কিছু উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও জামায়াতের প্রার্থী অংশ নিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। আবার জোটবদ্ধ হিসেবেই ভোটে অন্য দলের প্রতীক নিয়ে লড়াই করার সুযোগ রয়েছে দলটির নেতাদের।

জামায়াত নেতাদেরকে ভোট থেকে দূরে সরিয়ে রাখার দাবির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কী বলেছে- এমন প্রশ্নে নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সিইসি এ বিষয়ে বলেছেন, এজন্য প্রয়োজনীয় আইন বাংলাদেশ নেই। পরবর্তী সময়ে বিবেচেনা করতে হবে। কেননা, অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করার হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের বিষয় আছে। সরকারের অন্য আইনের বিষয়ও আছে।

কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটির নেতৃবৃন্দ তাদের দাবিগুলো জানিয়েছেন। জামায়াত, যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি আইন-কানুন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমরা অবহিত করব। এছাড়া আরপিও সংশোধনের বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, যে কোনো সংগঠন আলোচনার জন্য সময় চাইলে, সিইসি সময় দিলে, আলোচনা করা যেতে পারে। তারাও তো ভোটার। ভোটাররাও তো আমাদের স্টেকহোল্ডার।

নির্মূল কমিটির পাঁচ দফা হলো-১. ঝুঁকিপূর্ণ সকল নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হুমকি প্রদানকারীদের শাস্তির আওতায় আনা; ২. জামায়াতের অনুসারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে ঘোষণা করতে হবে যে, তাদের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই; ৩. নির্বাচনের সময় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবাধানবিরোধী এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা–বিদ্বেষ প্রচারকারীদের শাস্তির আওতায় আনা; ৪. ৭১ এর গণহত্যাকারীদের সন্তান বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য, যারা সর্বোচ্চ আদালতের রায় অগ্রাহ্য করছে তাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য ঘোষণা এবং ৫. সেনাবাহিনীকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোনো কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত করলে তাদের অন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে দাবিতে জানানো হয়।

কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৯২টি নির্বাচনি এলাকায় সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভোটের সংখ্যা শতকরা ১২ভাগ থেকে ৪৮ ভাগ পর্যন্ত। যার বেশির ভাগ ঝুঁকিপূর্ণ।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে