জাফরুল্লাহ চৌধুরীর গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস সিলগালা, ২ প্রতিষ্ঠানের জরিমানা ২৫ লাখ

ডেস্ক রিপোর্ট

ভ্রাম্যমাণ আদালত সাভারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মালিকানাধীন গণস্বাস্থ্য গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস সিলগালা করে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন । এছাড়া গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতালের লাইসেন্স থাকায়, অপারেশন বিভাগের সরঞ্জামাদি পুরাতন ও প্যাথলজি বিভাগের বিভিন্ন দোষত্রুটির জন্য ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি লাইসেন্স করার জন্য এক মাসের সময় দেয়া হয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।

আজ মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে সাভারের বাইশ মাইল এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠান দু’টিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

universel cardiac hospital

অভিযানের সময় গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন শাখাটি আলাদা না হওয়ায় এবং সেখানকার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করায় তা সিলগালা করে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

র্যাব হেড কোয়াটার্স, র্যাব-৪, সাভার উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত অভিযানে র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমকে সহযোগিতা করেন সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্টেট শেখ রাসেল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণব কুমার ঘোষ।

র্যাব-৪ সাভার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আব্দুল হাকিম জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে ব্রিফিং করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পর্যবেক্ষণ ও বিচারিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এছাড়া অভিযান চলাকালে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসে অভিযানের সময় দেখা যায়, কাঁচামালের গুদামের দেওয়াল থেকে চুন খসে পড়ছে। কোনো কেমিক্যালসের বোতলে মেয়াদ লেখা নেই, রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের কোনো রেজিস্টার নেই, মেয়াদ উত্তীর্ণ রাসায়নিক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরির নমুনা পাওয়া যায়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি বুঝতে পেরে মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কেমিস্ট শিবুতোষ মালাকার বেশকিছু রাসায়নিকের বোতলের গায়ে থাকা মেয়াদ কলম দিয়ে কেটে সময় বাড়িয়ে দেন।

অন্যদিকে প্যাথিডিন উৎপাদন দেখতে যাওয়ার সময় পরিকল্পিতভাবে সেখানকার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে রাখাসহ বিভিন্নভাবে ভুল তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে অসহযোগিতা করেন গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের গবেষণা, উন্নয়ন ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ব্যবস্থাপক ডা. মোশরেকা খাতুন, উৎপাদন পরিচালক নিতিষ চন্দ্র চৌধুরী, উৎপাদন ব্যবস্থাপক বিনিতা বিলকিস ও কেমিস্ট শিবুতোষ মালাকার।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম বলেন, দেশের ৯৫ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যাথিডিন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আজ আমি এখানে এসে তাদের কার্যক্রম দেখে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। তাদের অ্যান্টিবায়োটিক শাখাটিকে আলাদা করার জন্য ছয় মাস আগে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা সেটি অমান্য করেছে। এছাড়া ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে এসব ওষুধ খেয়ে প্রকৃতপক্ষে রোগীদের উপকার হচ্ছে না।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের বিষয়ে জাফরুল্লাহর সঙ্গে ৩ মামলার আসামি গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেন জানান, দ্রুততার সঙ্গে এসব ঘটনা ঘটে চলেছে যে, কোনটির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।

অভিযান চলাকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম গোলাম কিবরিয়া, ওষুধ পরিদর্শক নাহিন আল আলম, তাহমিদ জামিল, র্যাব-৪ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর আব্দুল হাকিম, আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাবেদ মাসুদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে