সরকারের হাইকমান্ড থেকে পুলিশকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেফতার বন্ধে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আরও সতর্ক হয়ে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো মামলা ও গ্রেফতার করতে নিষেধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এটা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
তবে সহিংসতাসহ বিভিন্ন মামলায় যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে তাদের গ্রেফতার এবং কোনো ঘটনা ঘটলে মামলা করা যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শনিবার এ নির্দেশনা দেন। পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। রাজনৈতিক গ্রেফতার ও মামলা বন্ধে সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি ও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে এমন নির্দেশনার প্রয়োজন ছিল।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যাচাই-বাছাই ছাড়া যেন-তেনভাবে যাতে কাউকে গ্রেফতার করা না হয়। বিষয়গুলোকে আরও সতর্কতার সঙ্গে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের মোবাইলে দুটি ক্ষুদেবার্তা পাঠান। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের অধস্তনদের বিষয়টি অবহিত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ক্ষুদেবার্তায় বলা হয়, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত না করে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও মামলা করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করেন কমিশনার। তবে বিভিন্ন মামলায় যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে তাদের গ্রেফতার ও কোনো ঘটনা ঘটলে সেটার মামলা করা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন পুলিশ কমিশনার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে বিএনপির অভিযোগ সরকার তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেফতার করছে। মৃত ব্যক্তি, হাসপাতালে ভর্তি ও দীর্ঘদিন ধরে দেশে নেই- বিএনপির এমন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’মামলা করে সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার ও পুলিশ বাহিনী। এতে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
সম্প্রতি নির্বাচন সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দুই দফা সংলাপে বসেন প্রধানমন্ত্রী। সংলাপে ৭ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেফতার বন্ধের দাবি। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে বিএনপির নেতাদের আশ্বস্ত করেন।