জাতিসংঘ কর্তৃক দেওয়া পরিচয়পত্র নিতে রাজি হচ্ছেন না রোহিঙ্গারা। তারা বলছে কোন জাতিগত পরিচয় সংবলিত পরিচয়পত্র নিয়ে থাকতে চায় না তারা। তাদের অভিযোগ এই পরিচয়পত্র নিতে তাদেরকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কয়েকজন রোহিঙ্গা মুসলিম সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার কাছে অভিযোগ করেন যে গত সপ্তাহে টেকনাফের হাকিমপাড়া ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য এসে রোহিঙ্গাদের একটি নিরাপত্তা পোস্টের কাছে জড়ো হতে বলেন। তখন অনেক রোহিঙ্গা ভাবেন যে হয়তো মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের তালিকায় তাদের নাম দেয়ার জন্যই সেখানে ডাকা হয়েছে। তাই অনেকেই ডাকে সাড়া না দিয়ে পালিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অনেক রাগন্বিত ছিল এবং সেখানে জড়ো হওয়া মানুষদের তারা তখন মারতে শুরু করেন। তারপর তারা কিছু মানুষকে জড়ো করে এবং জাতিসংঘের স্মার্ট কার্ডের সুবিধা ব্যাখ্যা করে। তবে রোহিঙ্গারা তাদের জানিয়ে দেয় যে তারা জাতিগত পরিচয়বহনকারী কার্ড নিতে আগ্রহী না।
ফোর্টিফাই রাইটস নামের একটি সংস্থাকে একজন রোহিঙ্গা বলেন, স্মার্ট কার্ড নিতে রাজি না হওয়ায় আমার মুখে আঘাত করা হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এই মাসের বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ১৮ রোহিঙ্গা মাঝিকে জড়ো করে এবং কার্ড নেয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের বুঝাতে বলেন।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে জাতিসংঘ একটি ডাটাবেস তৈরি করতে পারবে যেটি দিয়ে খুব সহজেই তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেয়া যাবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র ক্যারোলিন গ্লুক বলেন, সংস্থাটি বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে শরণার্থীদের সঙ্গে বিশেষ করে ইমাম, বৃদ্ধ এবং শিক্ষকদের সঙ্গে অসংখ্য কমিউনিটি বৈঠক করেছেন যাতে তাদের মন থেকে এই ভয় দূর করা যায় যে এই স্মার্ট কার্ড প্রত্যাবাসনের অংশ নয়।রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে তাদের পরিচয় সুরক্ষিত করার জন্য এই কার্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বলছে এই বছরের শেষ নাগাদ ২৭ হাজার রোহিঙ্গাকে পরিচয়পত্র দিতে চায় তারা