যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ১৬৬ কোটি টাকার নিরাপত্তা সহায়তা স্থগিত করেছে। চলতি বছরের শুরু দেয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুসারে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
দেশটির নিরাপত্তা দফতরের মুখপাত্র কর্নেল রব ম্যানিংয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির ১.৬৬ বিলিয়নের (১৬৬ কোটি) নিরাপত্তা সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এক ই-মেইল বার্তায় তিনি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডেভিড সিডনি। তিনি বিগত ওবামা প্রশাসনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও কেন্দ্রীয় এশিয়া অঞ্চলে নিরাপত্তা দফতরের উপ-সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে যে ধরনের নিরাপত্তা দিয়ে তার বিনিময়ে যা পেয়েছে তা অত্যন্ত হতাশাজনক। বলতে গেলে প্রতিদানে পাকিস্তান কিছুই করেনি। এর বিপরীতে সন্ত্রাসী গ্রুপ, যারা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে, তার মদদ দিয়ে গেছে দেশটি।
এক প্রশ্নের উত্তরে ডেভিড বলেন, পাকিস্তানের নেতারা সহযোগিতা করবেন বলে বরাবরই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে যে ধরনের সহযোগিতা দরকার তা তারা কখনওই করেনি। এসব কারণে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হতাশ। এমনকি হতাশ হয়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ আমেরিকানরাও।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বরাবরই ভঙ্গুর প্রকৃতির। তবে ট্রাম্প ক্ষমতার আসার পর থেকে এ সম্পর্ক আরও নড়বড়ে হয়েছে। সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে-এমন অজুহাতে পাকিস্তানকে শত শত কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়া স্থগিত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেইনিং প্রোগ্রাম থেকে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করেছে দেশটি।
রোববার ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, পাকিস্তানের প্রত্যেকেই জানতেন ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানে ছিলেন। তিনি পাকিস্তানে বছর পর বছর ছিলেন। অথচ তারা আমাদের কিছুই জানাইনি। উল্টো আমরা প্রতিবছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে এসেছি।
ট্রাম্পের এ মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন ইমরান খান। সোমবার এক টুইট বার্তায় ইমরান বলেন, তার (ডোনাল্ড ট্রাম্প) এ বিষয়ে আরও ইতিহাস জানা দরকার। পরবর্তীতে আরেকটি টুইটবার্তায় ইমরান খান লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চালিয়েছে তাতে দেশটির ৭৫ হাজার ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে, খরচ হয়েছে ১২৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। অথচ যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে দিয়েছে মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলার, যা খুবই সামান্য।
যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাস নির্মূল না করে ‘ডাবল গেম’খেলছে দেশটির সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একের পর সামরিক হামলা অব্যাহত থাকলেও সংগঠনটিকে বরাবরই সমর্থন দিয়ে আসছে পাকিস্তান।