পটভূমি : বাংলাদেশের সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া। শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভৌগোলিক কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনপদের একটি। জনপদের সূচনালগ্ন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৭১ সনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্টের কালরাত্রি বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কালো অধ্যায়ের সূচনা করে তা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত ছিল না। ‘৭৫ এ পথ হারানো বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন করে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ ফিরে পায় মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি। বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির ইতিহাসে ১৯৯৬-২০০১ সন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আওয়ামী লীগের মাত্র ৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের অর্জন ছিল ঈর্ষণীয় এবং অসামান্য। এই সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রথমবারের মতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে উন্নয়নের সড়কে যুক্ত হয়। নদীনির্ভর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আন্তঃযোগাযোগে বিশেষ করে সড়কপথের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে। আশুগঞ্জ উপজেলাসহ গণমানুষের বহু আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন হয়। স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসাসহ পুরো জেলায় অভাবনীয় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে। মোকতাদির চৌধুরীর এই উন্নয়ন মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়। জনৈক চারণ কবি লিখেনÑ স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ঘিরে/ রবিউল আছে সবার তরে/ গ্রামীণ উন্নয়নের রূপকার/ রবিউল মোদের অহঙ্কার। আবার অন্ধকারে দেশ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ১৯৯৬ সনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য লাভ করলেও দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকেনি। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতসহ চারদলীয় জোট ক্ষমতার মসনদে বসে পাকিস্তানি ভাবধারায় রাষ্ট্র পরিচালনা করে। এ সময় ৬৩ জেলায় বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ সারাদেশে গণহারে সংখ্যালঘু নির্যাতন মানুষ প্রত্যক্ষ করে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলদের মদদে জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঘটে। সারাদেশ যেন কারাগারে পরিণত হয়। ব্যক্তি স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। লুটপাট, দখল আর দুর্নীতির আঁতুরঘর হয়ে উঠে বেগম জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের ‘হাওয়া ভবন’। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া উন্নয়ন তো দূরের কথাÑ উন্নয়নের ‘উ’ শব্দটিও উচ্চারিত হয়নি। তারপর নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। ২০০৮ সনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। স্বপ্নের বাংলাদেশের পুনঃযাত্রা : ডিসেম্বর ২০০৮ এ বাংলাদেশের জনগণ বিপুল ভোটে আমাদেরকে আবারো ক্ষমতায় নিয়ে আসে। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যে ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর ধারণা উপস্থাপন করেছিলাম তারই আলোকে ২০০৮ সন থেকে অদ্যবধি অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। যুদ্ধপরাধের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসন প্রতিষ্ঠাসহ অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি শক্তভীতের উপর দাঁড়ায়। বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন তা আমাদের সক্ষমতার পরিচয় তুলে ধরে। জলে স্থলে অন্তরীক্ষে বাংলাদেশ আজ দেদিপ্যমান। এই সময় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, খাদ্য, যোগাযোগসহ সমস্তক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যের নতুন রেকর্ড হয়। টানা ৫ বছর রেকর্ড অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ছোঁয়ায় বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পেতে যাচ্ছে। দেশের এই অভাবনীয় অগ্রযাত্রায় যুক্ত হয়ে অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নে এগিয়ে চলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াও। গত এক দশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। উন্নয়নের এক দশক : বদলে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া : মোকতাদির চৌধুরী প্রচলিত রাজনৈতিক ধারায় ব্যতিক্রম একটি নাম। তিনি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেনÑ তাঁর সমস্ত কাজের জবাবদিহিতা করবেন। তিনি আরো বলেছিলেনÑ আমি আপনাদের খাদেম হিসেবে কাজ করতে চাই। এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে ছায়ার মতো জনগণের পাশে ছিলেন এবং এখনো আছেন। স্বাধীনতার পর এই আসনের সাধারণ মানুষ আর কোন জনপ্রতিনিধিকে এমনভাবে পাশে পায়নি, কাছে পায়নি। তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূরণ করেছেন, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে জনগণের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কাজ করেছেন। অতীতের অনিশ্চয়তা, সংকটের চক্রাবর্ত এবং অনুন্নয়নের ধারা থেকে বের করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে উন্নয়নের গতিপথে প্রতিষ্ঠিত করেন। এখানে ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সময়ে তার অর্জনসমূহের সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরা হলো : শিক্ষা : সদরে ৮টি ও বিজয়নগরে ৪টি বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ১২টি নতুন বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে; িি সদর ও বিজয়নগরে ১৬২ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৪৬টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ, পুরাতন ভবন মেরামত ও সংস্কার; িিসদর ও বিজয়নগরে ৭০টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ এবং ৩১০ জন শিক্ষকের চাকুরি জাতীয়করণ করা হয়েছে; িি তাঁর সক্রিয় সহযোগিতায় সদরে ৪টি ও বিজয়নগরে ২টি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (কলেজ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে; িি তাঁর সহায়তায় সদরে ও বিজয়নগরে ৫টি নতুন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (হাই স্কুল) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে; িি ১টি জেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ১টি দাখিল মাদ্রাসা নির্মাণ করা হয়েছে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ৫তলা বিশিষ্ট ছাত্রী হোস্টেল, ৫ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ও নির্মাণাধীন রয়েছে; িি সদর ও বিজয়নগরে ২টি টজঈ ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে; িি প্রত্যেক প্রাইমারি স্কুলে এবং মাধ্যমিক স্কুলে ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা ওয়াশরুম নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর ও বিজয়নগরে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের মাঝে সর্বমোট ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উপবৃত্তি এবং ৪৯ কোটি ৯৪ লাখ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে; িি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের মাঝে মোট ৫৭ কোটি ৪৭ লাখ ৮১ হাজার টাকার উপবৃত্তি এবং সর্বমোট ৫১ কোটি ৯ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩১টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ১৩টি বিষয়ে এবং কাজী শফিকুল ইসলাম কলেজে একাধিক বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হয়েছে; িিব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও মডেল গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ তলা একাডেমিক ভবন এবং সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ (প্রক্রিয়ায় রয়েছে); িি সরকারি মহিলা কলেজ, চিনাইর বঙ্গবন্ধু কলেজ, পৌর ডিগ্রি কলেজে অনার্স কোর্স ও সুহিলপুর কলেজে অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে; যোগাযোগ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যানজট নিরসনে মৌড়াইল রেলক্রসিংয়ের উপর দিয়ে একটি রেলওয়ে ওভারপাস/(ফ্লাইওভার) নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় ১৮২টি সড়ক নির্মাণ/ সংস্কার এবং ছোট-বড় ১১২টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে; িি প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বরোড থেকে উজানীসার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে; িি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইন ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ হয়েছে। এর ফলে ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ সহজ হয়েছে; িি খুব শীঘ্রই ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রুটে একাধিক কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালু হতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে রেলের আসন সংকটের স্থায়ী সমাধান এবং রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে;িি সদরের সাথে বিজয়নগর উপজেলার যোগাযোগ আরও সহজ করতে ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে (তিনটি বড় সেতুসহ) ১০ কি.মি দৈর্ঘ্যের শেখ হাসিনা সড়ক এখন দৃশ্যমান; িি আশুগঞ্জ-আগরতলা সড়কটি ৪ লেনে উন্নীতকরণের (যাতে থাকবে ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, নতুন সেতু) কাজ প্রক্রিয়াধীন (১৮০০ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক টেন্ডার হয়েছে); িি ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাণ তিতাস নদীর খনন কাজ চলমান। এর ফলে নৌ-যোগাযোগ আরও সহজ ও নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে নদীর নাব্যতা; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের আওতায় প্রায় ৪৯ কোটি টাকায় সুলতানপুর-চিনাইর-আখাউড়া সড়কটির প্রশস্তকরণ, সোজাকরণসহ উন্নয়নকাজ চলমান; িি কুরুলিয়া খালের উপর দ্বিতীয় অ্যান্ডারসন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে; িি ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-লালপুর সড়ক পুনঃনির্মাণ কাজ চলমান; িি প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সদর ও আখাউড়ার সংযোগ সড়ক হেলিডে রোডকে পুনঃনির্মাণ ও পুনঃর্গঠন করা হয়েছে (১টি বড় সেতুসহ); িি রামপুর-মনিপুর সড়ক (উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সড়ক) নির্মাণ করা হয়েছে; িি পুনিয়াউট মোড় থেকে রামরাইল ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সেতু পর্যন্ত ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক প্রশস্তকরণ ও পুনঃনির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন; িি চান্দুরা-আখাউড়া সড়ক প্রশস্তকরণ ও পুনঃর্গঠনের জন্য ৩য় বারের মতো প্রায় ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে; বিদ্যুৎ : বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার ১০০% জনগণ; িি ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১টি ২৩০/১৩২ গ্রীড উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদরে ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১টি ৮৫ মে.ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে; িি ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০ কি. মি. ১১/০.৪ কেভি লাইন নির্মাণ করা হয়েছে; িি ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১২০টি ১১/০.৪ কেভি বিতরণ ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে; িি ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩টি ৩৩/১১ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ৭৯৪ কি. মি. ও বিজয়নগর উপজেলায় ৫১৬ কি.মি. সহ মোট ১৩১০ কি.মি. লাইন নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ০২টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ০১টিসহ মোট ০৩টি সাব-স্টেশন বসানো হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ১৫টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ১০টি সহ মোট ২৫টি সাব-স্টেশন ক্ষমতা (এমভিএ) বসানো হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ১৬.৪ কি. মি. ও বিজয়নগর উপজেলায় ৩৬.৩ কি. মি. সহ মোট ৫২.৭ কি. মি. ৩৩ কেভি লাইন নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ১০১টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ২২৪টি গ্রামসহ মোট ৩২৫টি গ্রামকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ৪৪৬২০ জনকে ও বিজয়নগর উপজেলায় ৩৯,০১৭ জনসহ মোট ৮৩,৬৩৭ আবাসিক গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে িি সদর উপজেলায় ২০৮৬ ও বিজয়নগর উপজেলায় ১৩৬৮টি সহ মোট ৩৪৫৪টি বাণিজ্যিক ও শিল্পখাতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ৫৩৪টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬৮৪টি সহ মোট ১২১৮টি মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ও মন্দিরে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ১৩৪ কোটি ৯৮ লক্ষ ও বিজয়নগর উপজেলায় ৮৭ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা সহ মোট ২২২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা লাইন নির্মাণ বাবদ ব্যয় করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ও বিজয়নগর উপজেলায় ৭ কোটি ২৬ লক্ষ টাকাসহ মোট ১০ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ৩৩ কেভিএ লাইন নির্মাণ বাবদ ব্যয় করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ৬ কোটি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৪ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা সহ মোট ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা সাব-স্টেশন নির্মাণ বাবদ ব্যয় করা হয়েছে; িি ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫ মে.ওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে; স্বাস্থ্য : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে প্রথমবারের মতো বহুতলবিশিষ্ট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল নির্মাণ; িি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ; িি বিজয়নগর উপজেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন হাসপাতাল নির্মাণ; ডাক্তার ও নার্সদের জন্য পৃথক চারতলা আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর উপজেলায় ৯টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৫টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে; িি বিজয়নগরের খিরাতলায় ইসলামিক মিশন হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে এলোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে; আইন শৃঙ্খলা : ২০১১ সনে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। সদর ও বিজয়নগর উপজেলা আজ প্রায় ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত। ইভটিজিং ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করা হয়েছে; িি চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে; িি ব্যবসায়ীরা আজ নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছেন; িি মা বোনেরা নিরাপদে ঘরের বাইরে যেতে পারছেন; গ্রামীণ জনপদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী : সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী মোকতাদির চৌধুরীর সৎ ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে; িি ২৪৫২০ জন ব্যক্তিকে নিয়মিতভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা-স্বামীপরিত্যক্তা ভাতা, হিজরা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, জেলে ও দলিত সম্প্রদায়কে ভাতা প্রদান করা হয়েছে; িি ২০১৩ সালের টর্নেডোতে ক্ষতিগ্রস্ত ২১২০টি পরিবারকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে মোট ৪৪৫১ বান্ডেল টিন, ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা নগদ সহায়তা, ৫০ টন চাল এবং ১০০টি পরিবারকে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন বাড়ি নির্মাণে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে; অবকাঠামো : প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে; িি বিজয়নগর উপজেলা বাস্তবায়ন করা হয়েছে; িি সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (১০ তলা) ভবন নির্মাণ করা হয়েছে; িি জেলা শহরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের ৩ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে; িি বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে; িি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর ও বিজয়নগরে ৩টি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদরে ৫০০ মেট্রিক টন ও বিজয়নগরে ১০০০ মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হয়েছে; িি জেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদর ও বিজয়নগরে ৮টি আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে; িি বিজয়নগর থানা ভবন, ২টি পুলিশ ফাঁড়ি ও ১টি তদন্ত কেন্দ্র এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে ১টি নতুন পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে; িি বিজয়নগর ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে; িি সদরে ৭টি এবং বিজয়নগরে ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে; িি বিজয়নগরে পাবলিক হেলথ্ ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস এবং পশু চিকিৎসা ও প্রাণী স¤পদ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে; িি ২টি পল্লী উন্নয়ন ব্যাংক তথা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প অফিস নির্মাণ করা হয়েছে; িি বিজয়নগরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ধর্ম : ইসলামের প্রচার প্রসার ও সংস্কৃতির বিকাশে জেলা, সদর উপজেলা ও বিজয়নগর উপজেলায় মোট ০৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপনের কাজ বাস্তবায়নাধীন আছে; িি বর্তমান সরকারের কওমী সনদ স্বীকৃতির ফলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় সারাদেশে ১০১০জনসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগরে মোট ৪জন কওমী শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। আরো ৪ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে; িি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় ইতোমধ্যে সদর ও বিজয়নগরে ২ টি করে মোট ৪টি দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা (১ম-৩য় শ্রেণী) স্থাপন করা হয়েছে; িি এবং কোমলমতি শিশুদের অক্ষরজ্ঞান প্রদানে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় সদর ও বিজয়নগরে ৩২৫ টি প্রাক-প্রাথমিক ও কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র চলমান আছে। শিক্ষা সংস্কৃতি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সনদ অতীতের পুঞ্জিভূত সমস্যা-সংকট ও নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে মোকতাদির চৌধুরীর গতিশীল নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠে এসেছে। এই পথ ধরেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য দরকার সরকারের ধারাবাহিকতা। স্থিতিশীল উন্নয়ন এবং নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, কর্মচঞ্চল, সুখী-সুন্দর সমৃদ্ধ ব্রাহ্মণাড়িয়া গড়তে মোকতাদির চৌধুরীর বিকল্প নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষের আশা আকাক্সক্ষা রূপায়ণ সর্বোপরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে আমরা ‘শিক্ষা সংস্কৃতি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সনদ’ এগিয়ে যাচ্ছে সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঘোষণা করছি। আমাদের লক্ষ্য ও ঘোষণা সবার আগে সুশাসন ও নিরাপদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তবর্তী শহর। সীমান্তকেন্দ্রিক অবৈধ কর্মকা-কে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপরাধ এখানে সংগঠিত হয়। গত এক দশকে মোকতাদির চৌধুরীর সাহসী ও দৃঢ় অবস্থানের ফলে সদর ও বিজয়নগর উপজেলা আজ প্রায় ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত। ইভটিজিং ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা এবং চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এ জনপদের মানুষ স্বস্তিতে ছিল। মোকতাদির চৌধুরী পুনরায় নির্বাচিত হলে নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা বিধান, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, ভূমিদস্যুতা, টেন্ডারবাজি, মাদক নির্মূল ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা আরো দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। ধর্মীয় সহনশীলতা : ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে সংগঠিত হয়েছে। আমরা ধর্মীয় বিবেচনায় কোন মানুষকে বিচার করি না। দেশের ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মতো অন্যধর্মের মানুষেরও স্বাধীন মত প্রকাশ ও ধর্ম-কর্মের স্বাধীনতা রয়েছে। ধর্মীয় বিভিন্ন মত ও পথের সহনশীল সহাবস্থানকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে যাব। সকল ধর্মের শিক্ষা ও মূল্যবোধের প্রতি আমরা শ্রদ্ধশীল। সকল ধর্মের লোকদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্প্রীতিকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও জনমত গঠনে কাজ করব। গুরুত্বপূর্ণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি শিক্ষা ও মানব উন্নয়ন : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উন্নয়নের ধারাকে টেকসই করতে শিক্ষা ও মানব উন্নয়নের বিকল্প নাই। তাই শিক্ষার মান উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। অন্যদিকে মানব সম্পদ উন্নয়নও আমাদের অগ্রাধিকারের অন্যতম খাত। শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গৌরব করার মতো অনেক কিছু থাকলেও পরিকল্পনা ও যতেœর অভাবে তা হারাতে বসেছিল। বিগত এক দশকে সরকার গৃহীত সময়োচিত পদক্ষেপ, মোকতাদির চৌধুরীর সফল নেতৃত্ব ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের প্রচেষ্টায় হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারের পথে। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে জাতীয়ভাবে আমাদের গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষা প্রসার ও বিস্তারে যেসব পদক্ষেপ শুরু হয়েছে তা সারাদেশের মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হচ্ছে ‘চিনাইর শিশুমেধা বৃত্তি ও শিশুমেলা’। জেলার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ আয়োজন দেশের সর্ববৃহৎ ব্যক্তি উদ্যোগ। শিক্ষা নিয়ে আমাদের আশা আকাক্সক্ষা অনেক বেশি। শিল্পের রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিক্ষার ক্ষেত্রেও সারাদেশের অনুসরণীয় হোক এই প্রত্যাশায় ভবিষ্যতে করণীয় এমন কিছু প্রস্তাবনা নিচে দেয়া হলোÑ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি মেডিকেল কলেজ ও একটি পূর্ণাঙ্গ নার্সিং কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের প্রয়াস নেয়া হবে; িি ভাদুঘর ও সাদেকপুরে একটি কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে; িি বিজয়নগরে একটি সরকারি কৃষি কলেজ স্থাপনের প্রয়াস নেয়া হবে; িি সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে তিতাস নদীর পূর্ব পাড়ে (সীতানগর, কাশিনগর) মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির প্রয়াস নেয়া হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজের দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত বাসের ব্যাবস্থা করা হবে; িি বিজয়নগরে ১টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা অব্যাহতভাবে বাড়ানো হবে। বিদ্যুতায়ন ও শিল্পায়ন : ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার ১০০% জনগণ। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে এ সুবিধা সবাই ভোগ করছে। আমরা মনে করি এখন সময় কৃষি উন্নয়নের পাশাপাশি শিল্পায়নের। এ খাতে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টেকসই উন্নয়ন হবে। একই সঙ্গে খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, হালকা প্রকৌশল, ওষধ, প্লাস্টিক, খেলনা, গৃহস্থালি সহায়ক সামগ্রী, আইটি ও চামড়া শিল্পের মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে চিহিৃত করে শিল্পের পুনরুজ্জীবন, প্রসার ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মোকতাদির চৌধুরী পুনরায় নির্বাচিত হলে আমরা নি¤œলিখিত উদ্যোগ গ্রহণ করবোÑ তিতাস গ্যাস থেকে প্রাপ্ত আয়ের ২% ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উন্নয়ন তথা শিল্প উন্নয়নে ব্যয় করার দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে; িি নন্দনপুরের বিসিক শিল্প নগরীকে একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্পপার্ক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস নেয়া হবে; িি সুলতানপুরের দিকে ২য় বিসিক নগরী গড়ে তোলার প্রয়াস নেয়া হবে; িি শহরের ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য সড়ক বাজারে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড তৈরির ব্যবস্থা নেয়া হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ঐতিহ্যবাহী আনন্দ বাজারকে পুরোপুরি সংস্কার করে একটি আধুনিক ও ব্যবসায়ীবান্ধব বাজার হিসেবে গড়ে তোলা হবে; িি পুরাতন নিউ মার্কেটকে একটি আধুনিক বিপণি বিতানে রূপান্তর করা হবে; িি পৌরসভার মালিকানাধীন মার্কেটগুলোকে আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে; িি মফস্বল ও প্রান্তিক এলাকায় কৃষিনির্ভর এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে উৎসাহিতকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। নগরায়ন ও দৃষ্টিনন্দন ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ঐতিহ্যবাহী শহর হিসেবে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে দৃষ্টিনন্দন শহর হিসেবে গড়তে চাই। দীর্ঘদিনের অপরিকল্পনা আর ভূমিসংকটে শহর সম্প্রসারণ অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা শহরটিকে সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যানজট নিরসনে নির্মিত ফ্লাইওভারটিও শহরের সৌন্দর্য অনেকাংশে বৃদ্ধি করেছে। শহরের বিভিন্ন সড়ক সংস্কার ও প্রশস্ত করেছি। তবে আমাদের আরো করণীয় আছে। সেই লক্ষ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হবো। যেমনÑতিতাসের পূর্বপাড়ে পরিকল্পিত উপায়ে উপশহর গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে; িি পৌরসভার ড্রেইন সংস্কার ও পয়োঃনিষ্কাশনের মাধ্যমে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা; িি পৌরসভার খালের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করার প্রয়াস নেয়া হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্বদিকে শেখ হাসিনা সড়কের উভয় পাশে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ ও শিশুদের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থাসহ পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার জন্য মাস্টার প্লান তৈরীর ব্যবস্থা নেয়া হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুরাতন জেলখানার পরিত্যক্ত ভূমিতে একটি শিশুপার্ক নির্মাণ (যার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে); িি শহরে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে; িি ক্রমান্বয়ে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এলাকা পৃথক পৃথক হবে; যোগাযোগ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনকে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা এবং টিকেট ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাকে সুপরিসর রাস্তা দিয়ে সাজানো হবে; িি বাস, ট্রাক, সিএনজি, ইজিবাইক ও রিক্সার জন্য আলাদাভাবে আধুনিক স্ট্যান্ড ও চলাচলের আলাদা লেন গড়ে তোলা হবে; িি মধ্যপাড়া থেকে বড়াইল পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাদুঘর ও মেড্ডা বাসস্ট্যান্ডকে সংস্কার করে আধুনিক বাসস্ট্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলা হবে; িি মেড্ডা তিতাসপাড়া হতে শিমরাইলকান্দি ভায়া ভাদুঘর হয়ে কাঞ্চনপুর পর্যন্ত তিতাস নদীর পশ্চিম পাড়ে রাস্তা নির্মাণ ও শিমরাইলকান্দি-ভাদুঘরের নিকট কুরুলিয়া খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের প্রয়াস নেয়া হবে; িি মেড্ডাতে তিতাস নদীর উপর সেতু নির্মাণ করার প্রচেষ্টা করা হবে; িি ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন সড়কপথ নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা হবে। গ্রামীণ উন্নয়ন : গ্রামীণ উন্নয়নের লক্ষ্য হবেÑ গ্রামাঞ্চলে কর্মসৃজন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে গ্রাম ও শহরের পার্থক্য কমিয়ে আনা। স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিশিল্পের প্রসার, বিদ্যুৎ, গ্যাস, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও পয়োঃনিষ্কাশনের মাধ্যমে গ্রামগুলোকে আধুনিক উপশহরে রূপান্তর। মোটকথা প্রতিটি ইউনিয়ন সদরকে পরিকল্পিত জনপদ হিসেবে গড়ে তোলা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ : স্বাস্থ্য খাতে আমাদের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে আগামীদিনে আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখবো এবং নতুন পরিকল্পনায় সামনে নিয়ে এগিয়ে যাব। নি¤েœ কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরা হলোÑব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং একটি স্পেশালাইজড্ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ; িি বিজয়নগর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নতিকরণের উদ্যোগ নেয়া হবে; িি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থপেডিক্স হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করবো; িি নতুন নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করবো; িি গ্রামের মানুষ যাতে সাধারণ চিকিৎসা জন্য শহরমুখী না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; িি নিরাপদ মাতৃস্বাস্থ্য সেবা ঘরে বসেই যাতে মানুষ পায় সে উদ্যোগ নেব; িি সকলের জন্য নিরাপদ ও আর্সেনিকমুক্ত পানি, স্যানিটেশন ও ভেজালমুক্ত খাদ্যপ্রাপ্তির ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচন : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গত এক দশকের উন্নয়ন সফলতার চিত্র নানা জরিপেও উঠে এসেছে। প্রথমবারের মতো পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা জরিপে দেশের শীর্ষ ১০ ধনী জেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অবস্থান ৭ম। এ জেলায় দারিদ্রের হার ১০.৩%। আগামীদিনে দারিদ্রের হার ০% আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য দরকার উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অদক্ষ জনগোষ্ঠিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর। এ লক্ষ্যে আমরা নি¤œলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করব। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা; িি গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নকে গতিশীল করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি; িি যুবক ও যুব মহিলাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; িি বিদেশ গমণে সহায়তা করা; িি স্থানীয় শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান; মাদক প্রতিরোধ : আমাদের দেশে মাদকাসক্তি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। মদকের প্রধান শিকার তরুণ প্রজন্ম। সীমান্ত এলাকা হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও মাদকের ব্যবহার উদ্বেগের কারণ। মাদকাসক্ত যেমন পরিবারের বোঝা তেমনি সমাজেরও অশান্তির কারণ। গত এক দশকে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। আমাদের সমাজ ও তারুণ্যের শক্তিকে মাদক ও নেশার হাত থেকে রক্ষার জন্য আরো কঠোর নীতি অবলম্বন করা হবে। মাদকাসক্তদের পুর্নবাসন, চিকিৎসা সেবা ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকারি, বেসরকারি ও সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। খেলাধুলা ও বিনোদন : সুস্থ শরীর ও মনের বিকাশে খেলাধুলা এবং বিনোদনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। নানা কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই সেক্টরে ভাটা পড়েছিল। কিন্তু গত এক দশকে চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌকা বাইচ আবার চালু হয়েছে। তবে আমরা এতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও আশাবাদী। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে-মেয়েদের সাফল্য দেখতে উদগ্রীব। পাশাপাশি স্থানীয় খেলা ও বিনোদন মাধ্যমকেও উৎসাহিত করছি। এ জন্য অন্যান্য সময়ের মতো আগামীতেও ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবলসহ যাবতীয় খেলায় আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে। এ জন্য আমাদের পরিকল্পনাও রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্বদিকে শেখ হাসিনা সড়কের উভয় পাশে আধুনিক সুযোগ সুবিধা খেলার মাঠ ও শিশুদের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ; িি বিজয়নগর ও সদরে আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ। যেখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলা অনুষ্ঠিত হবে; িি বহুমুখী ক্রীড়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে; িি গ্রাম ও শহরের মাঠগুলোকে পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ ও নতুন খেলার মাঠ তৈরি; িি বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন শিশু-কিশোরদের বিকাশে খেলাধুলা ও বিনোদনে পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে; শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম : শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ গঠনে খেলাধুলা, বিনোদন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের পরিধি আরো ব্যাপক করা হবে। তরুণ-তরুণীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও মেধা বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা পূর্বের ন্যায় অব্যাহত থাকবে। নারীর ক্ষমতায়ন : নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা নির্ধারণে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৪টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে নারীর সামর্থ্য উন্নীতকরণ, নারীর অর্থনৈতিক প্রাপ্তি বৃদ্ধিকরণ, নারীর মতপ্রকাশ ও মতপ্রকাশের মাধ্যম সম্প্রসারণ এবং নারী উন্নয়নে পরিবেশ সৃষ্টিকরণ। আমরা বিশ্বাস করি- নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারী জাগরণের যে অগ্রগতি সূচিত হয়েছে ক্রমান্বয়ে তা বৃদ্ধি করা হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের সামগ্রিক উন্নয়নে সময়োপযোগী পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা অগ্রসর হবো। আগামীতে নারী উন্নয়নে আমরা নি¤œলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবÑ দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান কর্মসূচী বিস্তৃত করা হবে; িি মাতৃত্বকালীন মৃত্যুহার হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে; িি গ্রামের দুস্থ, প্রান্তিক এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার প্রচেষ্টায় গ্রামভিত্তিক আরো কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হবে; িি দরিদ্র স্বল্পশিক্ষিত বেকার মহিলাদের আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রদানের পদক্ষেপ নেয়া হবে; এছাড়া নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি, বৈষম্য বন্ধ এবং নারী শিশু পাচাররোধে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা বৃদ্ধি করব। নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা সমুন্নত রাখতে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। প্রবাসী কল্যাণ : প্রবাসে কর্মরত ভাই-বোনদের প্রেরিত অর্থ আমাদের অর্থনীতির রক্ত সঞ্চালক উপাদান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার প্রবাসীদের পরিবার পরিজনের কল্যাণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। একটি হাউজিং এস্টেট তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হবে প্রবাসীদের জন্য। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার কল্যাণ : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গৌরবকে সমুন্নত রাখা হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত প্রতিটি স্থান যেমন- যুদ্ধক্ষেত্র, গণকবর, বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোন প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক পাশে থাকব। একই সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি : ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয় বাস্তবতা। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি জ্ঞানভিত্তিক বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তুলতে সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি আইটি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। গণমাধ্যম : অগ্রসরমান জনপদ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনেকগুলো স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম রয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা, বিকাশ ও পেশাদারিত্ব আনয়নের লক্ষ্যে আমরা শুরু থেকেই কাজ করছি। তাদের পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখার ব্যাপারে আমরা সব সময়ই সচেতন এবং একই সঙ্গে সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হবে। এছাড়া আমরা নি¤œলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবÑ ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন রিলে সেন্টারকে পূর্ণাঙ্গ টিভি সেন্টারে রূপান্তরে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে িি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেতার কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি : সংস্কৃতিক রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন, অদ্বৈতমল্ল বর্মণ থেকে শুরু করে বহু কালজয়ী কবি, সাহিত্যিক, সংগীত ¯্রষ্টার জন্ম হয়েছে। তাদের অবদান বিশ্বশিল্প ভা-ারকে যেমন করেছে সমৃদ্ধ তেমনি আমাদেরকে করেছে গৌরবান্বিত। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখন নিয়মিত শিল্পসাহিত্যের চর্চা হচ্ছে। আগামীদিনেও শিল্প-সাহিত্যের প্রতি বিশেষ নজর ও পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে। পর্যটন : বিশ্বের বহুদেশ ও শহরের প্রধান অর্থনীতি এখন পর্যটনখাত। এ খাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ারও অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বছরে ২ লাখ ৫০ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। আমরা এ সংখ্যা ৫ লাখে উন্নিত করতে চাই। এ জন্য স্থানীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে যথাযথ সংরক্ষণ এবং পর্যটন উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়া সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
শিক্ষা সংস্কৃতি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া : র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
নির্বাচনী ইশতেহার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩)