ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কারামুক্ত

বিশেষ প্রতিনিধি

universel cardiac hospital

মানহানির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার তিন মাসেরও বেশি সময় পর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

রোববার রাত সাড়ে ৯টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) থেকে তিনি ছাড়া পান।

কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার জাহিদুল ইসলাম মত ও পথকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন মইনুল হোসেন। সেখান থেকেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে করা পৃথক ১৫টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। এর মধ্যে ১১টি মামলায় তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।

মানহানির অভিযোগসহ মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মোট মামলা ২২টি। এ নিয়ে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৯টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত ও ১৬টি মামলায় তিনি জামিন পান।

বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।

পৃথক এসব মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে মইনুল হোসেন আবেদন করলে এ শুনানি হয়।

আদালতে মইনুল হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুর রহিম ও এ কে খান উজ্জ্বল। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খুরশীদুল আলম।

এদিন মইনুলের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, আদালত বলেছেন- যার মানহানি হয়েছে অর্থাৎ যিনি সংক্ষুব্ধ কেবল তিনিই এ মামলা করতে পারবেন। তৃতীয় কোনো পক্ষ বা আর কারও এ মামলা করার এখতিয়ার নেই। ফলে মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কটি মামলায় জামিনও দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি মনে করি তার মুক্তিতে বাধা নেই।

এর পর গত ১৭ জানুয়ারি মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে করা আবেদনে কোনো আদেশ দেননি চেম্বার আদালত।

এতে মইনুল হোসেনের মুক্তিতে বাধা দূর হয়ে গেছে বলে জানান তার আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ননি ‌‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন।

গত বছরের ১৬ অক্টোবর বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরে টকশোতে লাইভে যুক্ত হলে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি তাকে প্রশ্ন করেন- ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, আপনি সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে এসে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কিনা?’

মইনুল হোসেন এ প্রশ্ন শুনে উত্তেজিত হয়ে বলেন ‘এমন প্রশ্ন করায় আপনাকে আমি চরিত্রহীন বলে মনে করছি।’

তার এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দেয় বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। এরপর রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে মানহানি ও ডিজিটাল আইনে মামলা হয়।

রংপুরে করা মানহানির এক মামলায় ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বশেষ তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে