চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইলিয়াস হোসেন উচ্চ আদালতের নির্দেশ পাওয়ার দুই বছর পর দেশের ‘অর্থনীতির প্রাণ প্রবাহ’ কর্ণফুলী নদীকে ‘গিলতে বসা’ আড়াই হাজার সরকারি-বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরুর পর প্রভাবশালীদের হুমকি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
তবে কোনো ধরনের হুমকিতে মাথানত না করে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার সকালে পতেঙ্গা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার তাহমিলুর রহমান ও নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সদরঘাট লাইটারেজ জেটি ঘাট এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
আদালতের নির্দেশ পাওয়ার দুই বছর পর কর্ণফুলীর দুই পাড়ে অবস্থিত আড়াই হাজার সরকারি-বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
অভিযান শুরুর পর দুপুর একটার দিকে মাঝিরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দখলে থাকা জায়গা উদ্ধারের সময় সেখানে পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোনো প্রভাবশালীর কাছে মাথানত করবো না। অলরেডি বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে হুমকি-ধামকি এসেছে। উচ্ছেদকারী ম্যাজিস্ট্রেট যারা, তাদেরকেও হুমকি দিয়েছে। আমরা সেই হুমকিতে বিচলিত নই।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা দেশকে ভালোবাসি। আমাদের নদী বাঁচাতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে। যে যতই প্রভাবশালী ব্যক্তি হোক না কেন, আমরা কোনোমতেই কাউকে ছাড় দেবো না।
হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে জানিয়ে ডিসি বলেন, অভিযানের কাজ আমরা শুরু করেছি। এটা চলতে থাকবে। যতদিন পর্যন্ত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শেষ না হবে, ততদিন পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। আরএস অনুযায়ী যতটুকু ভাঙ্গা দরকার, সবটুকুই ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
আরএস জরিপ অনুযায়ী কর্ণফুলীর সীমানা নির্ধারণ করে নদীর পাড়ে ২ হাজার ১১২টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
জানা যায়, উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম ভাগে সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। পরে পতেঙ্গা ও চাক্তাই এলাকায় উচ্ছেদ শরু হবে। পে লোডার, এক্সক্যাভেটর ও ট্রাক নিয়ে প্রায় ১০০ জন শ্রমিক নদী তীরের অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙার কাজ করছেন।
বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও র্যাব সদস্য ছাড়াও সিটি করপোরেশন, সিডিএ, চট্টগ্রাম বন্দর কতৃর্পক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস সাভির্স ও কণর্ফুলী গ্যাসের প্রতিনিধিরা এ অভিযানে রয়েছেন।